সিলেটে অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দুর্দশাগ্রস্ত বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর এর সারা ফাউন্ডেশন এর সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ফেসবুক বৃত্তিক বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান।
এসব প্রতিষ্ঠানে একঝাঁক তরুণ-তরুণী নিজ উদ্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মানবতার সেবায়।
বিশেষ করে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ জেলার গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর টাঙ্গুয়ার হাওড়াঞ্চলের বন্যাকবলিতদের আশ্রয়, নিরাপত্তা, খাবার ও ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন তারা।
সারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আমিরুল ইসলাম রাসেল ও (সারা,র) অন্যতম সদস্য রাইসা আমাদের জানিয়েছেন, তাদের ফাউন্ডেশন সহযোগিতায় সুনামগঞ্জের অধীনে এই মুহূর্তে ১০ টির মতো নৌকাবোট নিয়ে এসব মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ।
জানা যায়, গত ১৬ জুন আকস্মিক ঢলে সুনামগঞ্জের সাহেববাড়ি ঘাট তলিয়ে যায়। সারা,র টিম নিজেদের ফান্ড এ ত্রান-সাহায্য নিয়া রওনা হয়।
শুধু ত্রাণ সামগ্রী নয়; এসব বানভাসিদের বিনামূল্যে খাবার জোগাড় করছেন তারা। নিজেরাই রান্নাবান্না করে তাদের খাওয়াচ্ছেন।
এ খাবারের যোগানে তাদের সাপোর্ট দিচ্ছে ঢাকা, সিলেট ও প্রবাসে অবস্থান রত সহকর্মীরা। তারা বিকাশ, নগদের মাধ্যমে যে যতটুকু পারছেন সহায়তা করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় প্রশাসনও মাঝেমধ্যে এসে তাদের তদারকি করছেন।
সারা গ্রুপটির অন্যতম তিন সদস্য কামরুল ইসলাম রাব্বি, শাকিল আহমেদ ও রাইসা আক্তার মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে তাদের ত্রাণ সামগ্রী ও খাবার ১৫০০+ মানুষ কে দিয়েছেন। বর্তমানে নৌকা সুনামগঞ্জ গোয়াইন ঘাটে আছে। নৌকায় মজুদ করা খাবার প্রথম দিনই শেষ হয়ে যায়। এর পর থেকে ছোট নৌকা দিয়ে ঘুরে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করছেন তারা। নিজেদের গ্রুপ আর পেজে পোস্টের মাধ্যমে ফান্ড সংগ্রহ করছেন। গ্রুপের ফলোয়াররা ব্যাপক সাড়াও দিচ্ছেন। শিগগিরই ঢাকা থেকে তাদের একটি টিম ২০০ মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাবে টাঙ্গুয়ায়।
কথা হয় সারা,র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আমিরুল ইসলাম রাসেল সঙ্গে।
শনিবার রাতে এক অডিওবার্তায় তিনি সুনামগঞ্জের বন্যা ও বন্যাপীড়িত মানুষের ভয়াবহ দুর্দাশার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এমন বন্যা সুনামগঞ্জের মানুষেরা আগে দেখেনি। পানিতে তলিয়ে যায়নি এমন স্থান খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সবচেয়ে কম পানি ওঠা স্থানেও হাঁটু সমান পানি। কোথাও কোমর, কোথাও বুক সমান। অনেকের ঘরের চাল ডুবে গেছে। জীবন বাচানোর জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণই অসম্ভব এখন। আমরা শুধু খাবার সরবরাহ করে যাচ্ছি। মাথা গোঁজার জন্য আমাদের নৌকাগুলো ছেড়ে দিয়েছি।’
বলেন, ‘গত ২২ তারিখে আমাদের টিম চাঁদপুর থেকে সুনামগঞ্জ আসে। তাদের সবার খাবারের ব্যবস্থা করছি আমরা। আগামীকাল (শনিবার) পর্যন্ত খাবারের জোগান দিতে পারব। এর পর কী হবে বলতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন,‘সারা ফাউন্ডেশন একদল তরুণ সেচ্ছাসেবী টিম সবসময়ই অসহায় মানুষের পাশে ছিলো কিছুদিন আগেও ছাতকে পানি উঠায় আমরা ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে এসেছিলাম আবারও পানি উঠে গেছে দেশবাসীর জন্য সবাই দোয়া করবেন ।’
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আটকেপড়া মানুষকে উদ্ধারের বিষয়কে এখন অগ্রাধিকার দিচ্ছি আমরা। উদ্ধার করে আনা মানুষের জন্য ডিসি কার্যালয়সহ সরকারি সব অফিস এবং বেসরকারি অনেক ভবনে দোতলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি। তারা হাওড়ে বিভিন্ন নৌকায় আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন।