দীর্ঘ ১০ ঘন্টা টানা অপারেশন। ১৬ মে মধ্যরাতে শুরু হওয়া এ অপারেশন শেষ হয় সকাল সাড়ে এগারটার দিকে। তবে অপারেশন সাকসেসফুল। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে বিচ্ছিন্ন হওয়া পুলিশ সদস্য জনি খানের হাতের কব্জি জোড়া লেগেছে।
আর এই অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউটে হ্যান্ড অ্যান্ড মাইক্রোসার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী। ঢাকার আল মানার হাসপাতালে এ অপরাশেন করা হয়।
চাট্টিখানি বিষয় নয়, টানা দশ ঘন্টার বেশি সময় এমন কঠিন কাজ নিয়ে পড়ে থাকা। তাও আবার অপারেশন শুরু হয়েছে হাত বিচ্ছিনের প্রায় একদিন পরে। তবে এমন অসাধারণ কাজটি সাকসেস করেছেন ডা. সাজেদ। কেবল এই পুলিশ সদস্যর হাতই নয়, এর আগে এমন বহু জটিল অপারেশন করেছেন তিনি। একজন নিভৃতচারী চিকিৎসক সাজেদুর রহমান ফারুকী। নিজের ঢাক-ঢোল পিটান না। ভালোবাসেন কেবল কাজকে।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা গ্রামের সন্তান ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকী। আইডিয়াল স্কুল, নটরডেম কলেজ হয়ে এমবিবিএস করেন চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেবে। অর্থোপেডিকসে এমএস পাশ করেন নিটোর থেকে। এর পর তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ভারতের গঙ্গা ও বুম্বে হাসপাতাল এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন।
দেশের প্রেক্ষাপটে ডাক্তারী পেশা সম্মানজনক হলেও ক্ষমতাবান পেশা না। ফলে মাঝেমধ্যেই প্রভাবশালীদের হাতে নীপিড়নের শিকার হওয়ার সংবাদ পাই। অনেক ডাক্তার অর্থ ছাড়া যেমন মানবিকতার ধার ধারেন না, ঠিক তেমনি অনেক ডাক্তার নিজ জীবনকেই বিলিয়ে দিচ্ছেন মানবসেবায়। এসব আড়ালে থাকা মানুষগুলোর জন্য ভালোবাসা।
এমন অসাধারণ কাজটি করেছেন ডা. সাজেদ। তবে অন্য কোনো প্রভাবশালী এর চেয়ে ছোট কাজ করলেও অভিনন্দনের বন্যায় এতক্ষণে ফেসবুক ভেসে যেত। কিন্ত ডাক্তারদের বেলায় আমাদের কার্পণ্য।
ডা. সাজেদের জন্য এক পৃথিবী ভালোবাসা। এমন অসম্ভব কাজগুলো তার হাত দিয়ে আরও বেশি সম্ভব হোক। আরও অনেক সাজেদের সৃষ্টি হোক আমাদের দেশে।