শিশু শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সদাসুন্দর, নিষ্পাপ ও মায়াবী চেহারা। তাই তো ন্যূনতম বিবেকবান মানুষ কোনো শিশুকে কাছে পেলে কোলে টেনে নিয়ে আদর করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। শিশুরা মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনের আনন্দের খোরাক। কিন্তু এই শিশুদের যে বয়সে দুষ্টুমিতে মাতিয়ে রাখার কথা খেলার মাঠ, তখন তারা থ্যালাসেমিয়ার মতো দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে শুয়ে থাকতে হয় হাসপাতালের বেডে। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ধরগাঁও গ্রামের মোঃ খুশিদ আলমের থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত দুই ফুটফুটে শিশু পুত্র ফয়সাল আহম্মেদ (৬) ও কন্যা মোছাঃ তাজমহল (৭)। তাদের বয়স যখন ১ ও ২ বছর, তখনই মারাত্মক রোগ থ্যালাসেমিয়া ধরা পরে। তখনি মা-বাবার ঘরে যেন নেমে আসে অন্ধকার। এ রোগে আক্রান্তদের সুস্থ থাকার জন্য সারা জীবন নিয়মিত রক্ত দিতে হয়। এক ব্যাগ রক্ত পাওয়ার জন্য অনেক খাটুনি খাটতে হচ্ছে। ছেলে মেয়ের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ এ্যাপোলো, পিজি, শ্যামলি শিশু হাসপাতাল সহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা বিগত ৫ বছর ধরে তাদের চিকিৎসার চালিয়ে আসছে। কিন্তু কোন উন্নতি হচ্ছে না। থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসার খরচও অনেক। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী তাদেরকে ভারত “ভেলর” হাসপাতালে চিকিৎসার করাতে হবে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত দুই শিশুর পিতা খুশিদ আলম একজন দিনমুজুর। একটি ভাড়াটিয়া অটো রিক্সা চালিয়ে তাদের সংসার চলে। তাই বলে কি চিকিৎসা থামান যায়? নিজে একবেলা না খেলেও সন্তানদের চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি দেবেন না তিনি। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রোগ অন্য যেকোনো রোগের মতো নয় যে একবার চিকিৎসা করালেই সেরে উঠবে। বছরের পর বছর এ রোগের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া লাগে। চিকিৎসার জন্য এত টাকা কোথা থেকে পাবেন খুশিদ আলম। দুচিন্তাই দিনের পর দিন না খেয়ে চলত সংসার। খুশিদ আলমের পিতা রেখে যাওয়া জায়গা জমি বিক্রী করে এত দিন চালিয়েছেন তাদের দুই সন্তানের চিকিৎসার খরচ। ফয়সাল ও তাজমহল যখন থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ল, তখন অসহায় বাবা খুশিদ আলম রাস্তা মানুষ ও বিভিন্ন কলেজের ছাত্রদের ধরে ধরে তাদের সন্তানদের জন্য রক্ত দিতে বলতেন। খুশিদ আলম বলেন, আমি আমার দুই সন্তানের চিকিৎসার জন্য আমার বাবার রেখে যাওয়া সমস্ত জায়গা জমি বিক্রি করে এতদিন চিকিৎসার খরচ চালিয়েছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মত খরচ হয়েছে। দুই শিশুর যখন রক্তের প্রয়োজন হত তখন আত্মীয় স্বজন সহ স্কুল কলেজের ছাত্র/ছাত্রীর ধারে ধারে ঘুরে রক্ত যোগার করেছি। বর্তমানে আমার দুই শিশু ফয়সাল ও তাজমহলের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত “ভেলর” হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আমার সন্তানের উন্নত চিকিৎসার করানো মত বিন্দুমাত্র সামর্থ্য নেই। থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত ফয়সাল ও তাজমহলের উন্নত চিকিৎসা করে তাদের জীবন বাচাঁনোর জন্য আপনাদের সাহায্য প্রয়োজন। সাহায্য করতে খুশিদ আলম, হিসাব নং- ৩৩১৮৩০১০৩৫৮৪৭ সোনালী ব্যাংক লিঃ নান্দাইল শাখা, ময়মনসিংহ অথবা বিকাশ (ব্যক্তিগত) ০১৯৮৮-৫৭৭৬১১।