চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মনুরকান্দি গ্রামে গ্রাম্য সালীশদার মোঃ নাসির উদ্দীন এর বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলাধীন মনুরকান্দী গ্রামের মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দীন স্থানীয় গ্রাম্য ছোটখাটো কলহ বিবাদের সমাধান করে আসছেন দীর্ঘ দিন যাবত।এর মাঝে আবার কিছুকাল প্রবাসে কাটিয়েছেন। ইদানীং বাড়িতে আসার পর আবারও লোকজন তাদের বিভিন্ন জামেলা নিয়ে তার দারস্থ হন। তিনিও তাদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সেচ্ছায় কাজ করে থাকেন। ঠিক তেমনই একটা জমিসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে পাশের বাড়ির মরিয়ম ও প্রতিপক্ষ তার দারস্থ হন। নাসির উদ্দিন সাহেব গ্রামবাসীদের নিয়ে দীর্ঘদিন সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু একটি পক্ষের অসহযোগীতার কারনে ব্যর্থ হন বারবার। অতপর বিষয়টি নিয়ে পক্ষগন একে অপরের বিরুদ্ধে মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ দাখিল করলে এসআই মনিরুজ্জামান নাছির উদ্দীনের উপরই সমাধানের দায়িত্ব দেন। তিনি পূর্বের ন্যায় আইন সঙ্গত সঠিক কথা বলার কারনে বিবাদি আলআমিন তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। তাকে এ ব্যপারে কথা বলতে নিষেধ করেন এবং সালিসীর নিকট থেকে জমি বাবদ রায় তার পক্ষে না দিলে উক্ত জায়গার মূল্যানুযায়ী চাঁদা দাবি করেন।
এমন পরিস্থিতি চলাকালীন মুহুর্তে গত ০১-০৪-২০২২ইং তারিখে জুৃ্ম্মাবাদ (শুক্রবার)নাসির উদ্দীন সাহেবের মহল্লার মসজিদে মসজিদ কমিটি গঠন সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে পূর্বের কমিটি গঠন সংক্রান্ত মতবিরোধ বাদ দিয়ে একটি সুষ্ঠু সুন্দর কমিটি গঠনের প্রস্তাবে সকলে সম্মতি প্রদান করেন। ঠিক মিটিং শেষ মুহুর্তে আবুর কান্দির আল-আমিন ও তার কয়েকজন স্থানীয় বখাটে সহযোগী সাথে নিয়ে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে অভিমত ব্যক্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু নাসিরউদ্দিন বলেন, আমরা নিজেরাই আমাদের সমস্যা সমাধান করে কমিটি গঠন শেষ করে ফেলেছি।আর এ নিয়ে মতবিরোধ হবে না। অতএব এ বিষয়ে আর বাড়াবাড়ি করার প্রয়োজন মনে করি না। আল-আমিন সাহেব সেখানে কোন কথা বলতে না পেরে পূর্ব শত্রুতার জের দরে আবুরকান্দি এসে লোকবল নিয়ে বিকাল সাড়ে চারটায় নাসির উদ্দীন এর বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, প্রথমেই দলবল নিয়ে নাসির উদ্দিনের ঘরে নাসির উদ্দিন সাহেবকে খুঁজতে থাকেন তাকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রীর সাথে তর্কে জড়িয়ে তাকে আঘাত করতে থাকে এবং ঘরের ভেতর ডুকে শোকেসের থালা-বাসন আয়না ভাঙচুর করেন সেই সাথে ড্রয়ার খুলে ওখান থেকে প্রায় তিন লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।
এদিকে নাসিরুদ্দিন ও তার চাচাতো ভাই চাঁদপুর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানান আমরা নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাচ্ছিলাম। তাদের হামলা দেখে নাছির উদ্দীন ভয়ে তার নিজ ঘরে প্রবেশ করেননি , তিনি ভেবেছেন তাকে ঘরে না পেয়ে হয়তো ওরা চলে যাবে। এবং নামাজের সময় একটা সংঘর্ষ ঘটতে পারে ভেবে স্ত্রীর গায়ে হাত দেওয়ার পরে ও চুপ থাকার চেষ্টা করেন।তিনি আক্ষেপ করে বলেন আমি ভাবতেও পারিনি তারা রোজার দিনে আমার স্ত্রীকে আঘাত করবে।
ঘরে হামলার পর হামলাকারীরা নাসির উদ্দিনকে দেখেতে পেলে তাকেও মারধর করে আহত করলে এলাকাবাসী এসে তাকে উদ্ধার করে। নাসিরুদ্দিন উপায়ন্তর না পেয়ে পুনরায় হামলার ভয়ে 999 তে কল করলে তাৎক্ষণিক মতলব উত্তর থানার এসআই মোঃ মনিরুজ্জামান উপস্থিত হয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সাথে সাথে নাসির উদ্দিন এবং তার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর নাসিরুদ্দিন স্থানীয় লোকজনের মীমাংসার আশ্বাসে কোন প্রকার মামলা মোকাদ্দমার আশ্রয় গ্রহণ করেন নি।
এদিকে বিবাদী পক্ষ আলামিন সাক্ষী হয়ে মনুরকান্দি গ্রামের ফেরদৌস সাহেবকে ফুসলিয়ে তার মাধ্যমে মতলব উত্তর থানায় তাদেরকে আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মতলব উত্তর থানার কোন সহযোগীতা না পেয়ে তারা চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে সেই নাছিরউদ্দীন গং কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। এলাকায় এই ঘটনার সঠিক বিচার না পেয়ে এবং বিবাদী পক্ষের এহেন সন্ত্রাসী হামলার সঠিক বিচার দাবী করে মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চার তারিখে চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। তিনি পরবর্তীতে জানতে পারেন তার স্ত্রী এবং তাকে আহত,কিংবা ঘরবাড়ি ভেঙে এবং লুটপাট করে উল্টো তাদেরকে আসামি করে বিবাদী পক্ষের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে একটু মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
বর্তমানে বিষয়টি মীমাংসার বিষয়ে আব্দুল কান্দির মোঃ মজিবুর রহমান আশ্বস্ত করলেও নাসির উদ্দিন সাহেব ঘটনাস্থলে বৈঠক বসে বিচার নিষ্পত্তি করার দাবিতে অটল থাকার কারণে বিষয়টি নিষ্পত্তি হচ্ছে না। কিন্তু সালিশী মজিবুর রহমান তার নিজ বাড়ি আবুরকান্দিতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সালিশ বসানোর অনুরোধ জানান। উভয় মতপার্থক্যের কারণে বিষয়টি সমাধানে বিলম্ব হচ্ছে।