পিক-আপ চাপায় ঘটনাস্থলে নিহত ৪ ভাই ডা. অনুপম শীল, নিরুপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল।
কিছু আগে মারা যাওয়া বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে পিক-আপ চাপায় একই পরিবারের ৫ ভাই নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৪ জন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে ১ জন নিহত হন।
আহত দুই ভাই-বোনকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ায় উপজেলার মালুমঘাট বাজার সংলগ্ন নার্সারি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সাফায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড হাসিনা পাড়া এলাকার মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের ছেলে ডা. অনুপম শীল (৪৬), তার ভাই নিরুপম শীল (৪০), দীপক শীল (৩৫), চম্পক শীল (৩০)। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রক্তিম শীল (৩৬) নামের আরও এক ভাই মারা যান।
দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন, সরন শীল, প্লাবন ও হীরা শীল। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মালুমঘাট এলাকার বাসিন্দা ডুলাহাজারা ইউপি নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এম আর মাহবুব জানান, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া হতে মালুমঘাট এসে বসতি গড়ার পর সুরেশ চন্দ্র শীল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে সেবা দিতেন। তার ছেলেরা কুতুবদিয়ায় থেকে বাবা-মায়ের কাছে আসা যাওয়া করতো। গত দশদিন আগে ডা. সুরেশ পরলোক গমন করেন। পিতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও শ্রাদ্ধ করতে সন্তানরা পরিবারসহ রিংভং বাবার বাসায় অবস্থান করছিল। সনাতন ধর্মীয় রীতি অনুসারে ভোরে সন্তানরা শ্রাদ্ধ করতে বের হন এবং বাসায় ফেরার সময় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, ‘ঘটনাটি চরম হৃদয়বিদারক। চার সহোদরের সৎকার করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সাফায়েত হোসেন জানান, নিহতদের বাবা দশদিন আগে মারা যান। বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের জন্য সনাতন ধর্মমতে সুরেশের সাত ছেলে ও এক মেয়ে ভোরবেলা ক্ষৌর কর্ম (মাথার চুল ফেলে দেওয়া) সম্পন্ন করতে হাসিনাপাড়ার তিন রাস্তার মন্দিরে যান। মন্দির থেকে ক্ষৌরকর্ম শেষে বাড়ি ফেরার পথে একসাথে রাস্তা পার হচ্ছিলেন তারা। এ সময় কক্সবাজারমুখী নাম্বার বিহীন একটি পিক-আপ তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলে ৪ জন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজন মারা যান। জনমনে প্রস্ন এটা কি পরিকল্পিত হত্যা নাকি মৃত্যু।
এর আগে রবিবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ায় পিক-আপকে ওভারটেক করতে গিয়ে মিনি ট্রাকের সংঘর্ষে বাস চালক-হেলপার ও ট্রাক চালকসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন আরও অন্তত ৩০ জন। এ ঘটনার ৩০ ঘণ্টার মাথায় চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা মালুমঘাট রিংভং এলাকায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন নিহত হন।