সিরাজদিখান প্রতিনিধি : আরিফুল ইসলাম শাকিল
ইন্টারনেটভিত্তিক মোবাইল অ্যাপ ও ডিজিটাল আর্থিক সেবা ব্যবহার করে এমএলএম ব্যবসার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- আবুল হোসেন পুলক (৪০), মাহাদী হাসান মল্লিক (৩৫), মিজানুর রহমান ওরফে ব্রাভো মিজান (৫৫), মহিউদ্দিন জামিল (৩৮), সাইফুল ইসলাম আকন্দ (৪২), কভেজ আলী সরকার (৩৫) ও শাহানুর আলম শাহীন (৪২)।
গত শনিবার সিআইডির ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের একটি দল দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, চক্রটি চারটি এমএলএম কোম্পানি খুলে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নয়টি মোবাইল ফোনসহ ২০টি সিমকার্ড, একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেক বই ও এটিএম কার্ড, নগদ ৬২ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন অবৈধ এমএলএল কোম্পানির ব্যবসা পরিকল্পনার কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
রোববার দুপুরে রাজধানী ঢাকায় সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানান ঢাকা মেট্রো সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক ইমাম হোসেন।
তিনি বলেন, “গ্রেপ্তাররা প্রথমে বিনিয়োগ করতে আগ্রহীদের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাবার খাইয়ে নানান অফারের কথা বলে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করেন। তারা হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে গ্রুপ খুলে দেশব্যাপী প্রচারণা চালায়।
“তারা সাধারণ মানুষকে অধিক কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।”
তিনি জানান, এর আগে আনজাম গ্লোবাল লিমিটেড ও পিপিসি গ্যালারি ডটকম নামের এমএলএম কোম্পানি চালু করে ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়।
“এরপর তারা মাইদিনবিডি ডটনেট ও এফসিএসট্রেড নামের এমএলএম কোম্পানি খুলে এক বছরে টাকা তিন গুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আবারও প্রতারণা শুরু করে।”
সিআইডির ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেপ্তাররা কিছুদিন আগে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে বিমান এবং গাড়িতে করে পাঁচ থেকে ছয়শ জন বিনিয়োগকারীকে নিয়ে কক্সবাজার যান। সেখানে একটি বিলাসবহুল হোটেলে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদেরকে আকৃষ্ট করে।
“এ অনুষ্ঠানের অসংখ্য ছবি ও ভিডিওচিত্র আসামিদের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল থেকে পাওয়া যায়।“
আরো জানা যায় মহাদি হাসান মল্লিক রাজনৈতিক সংগঠনের অনুমোদন ব্যতীত , সভাপতি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ মুন্সিগঞ্জ শাখা ও অনুমোদন ব্যতীত আওয়ামী স্বাধীনতা প্রজন্মলীগ এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বলে মিথ্যে প্রচারণা করে মানুষকে আকৃষ্ট করে এবং মানুষ এর মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে জানা যায় ।
গ্রেপ্তারদের অধিকাংশই এর আগে ডেসটিনিতে কাজ করার পাশাপাশি অসাধু উপায়ে জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।