বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। শোকের মাস আগস্ট’কে কেন্দ্র করে এই উ’ত্তা’প ছড়িয়ে পড়ছে রাজনীতির অঙ্গনে। প্রধান দুই দলের কথার যু’দ্ধ এখন রাজনীতির শীতল আবহাওয়াকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। এবার জাতীয় শোক দিবস হচ্ছে ভিন্ন অবয়বে ভিন্ন আঙ্গিকে। আওয়ামী লীগ সত্য অনুসন্ধান এবং বঙ্গবন্ধু হ’ত্যার মূল র’হ’স্য উন্মোচনের দাবি তুলছে আগস্টের প্রথম দিন থেকেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম অনুষ্ঠানেই বলেছেন যে, বঙ্গবন্ধুর হ’ত্যার পেছনে নেপথ্যে যারা ছিল তাদেরকেও চিহ্নিত করা হবে।
এরপর পাল্টা পাল্টি আক্রমণে পুরো বিষয়টি জমে উঠেছে। আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ই’স’লা’ম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর কিছু বক্তব্য সত্য বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের নেতারা যে ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর কিছু করতে পারেনি সেই বক্তব্যের সঙ্গে একমত। ফলে রাজনীতিতে আবার ৭৫ এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হা’ম’লার বিষয়টি সামনে এসেছে।
আর এই দাবিটি আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিল। এবার শোকের মাসে একদিকে যেমন ১৫ আগস্ট নারকীয় হ’ত্যাকা’ণ্ডের কথা এসেছে তেমনি এসেছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হা’ম’লার কথাও। এই দুটি ঘটনায় বিএনপি, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার নাম এসেছে এবং এই আক্রমণ প্রতিআক্রমণের মাঝেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি মৌলিক প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন যে, চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার কোনো কবর নেই। এখানে জিয়ার ম’রদেহ নেই। এটি নিয়ে একটি নাট’ক করা হয়েছে। বিএনপি নেতারাও এটি ভালো করে জানে।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়েও বিএনপি-জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ছাত্র ঐক্য আ’ন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় খুললে অরাজকতা তৈরি হতে পারে। সেজন্য তিনি ছাত্রলীগকে প্রস্তুত হতে বলেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অক্টোবর নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় খুলুক না খুলুক সেপ্টেম্বর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে দৃশ্যমান আ’ন্দোলন শুরু হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কথার যু’দ্ধ খুব শিগগিরই রাজপথের যু’দ্ধে রূপ নিতে পারে। বেশ কিছুদিন ধরেই বিএনপি আ’ন্দোলনের সুযোগ খুঁজছিল এবং তারা আ’ন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল। ঢাকা মহানগরীর দুটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন সেই আ’ন্দোলনের প্রস্তুতির একটি অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে। এরপর থেকে এই ধারায় বিএনপি এখন নতুন করে একটি রাজনৈতিক আ’ন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আ’ন্দোলন করার জন্য বিএনপি একটি মোর্চা করতে চাইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে বিএনপি চিঠি দিবে বলেও জানা গেছে। বিএনপি সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে আ’ন্দোলন করতে চাইছে।
বিএনপি মনে করছে যে, নির্বাচনের আগে একটি বড় ধরনের আ’ন্দোলন যদি গড়ে না তোলা যায় তাহলে পরে আগামী নির্বাচনেও বিএনপি কিছু করতে পারবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনে করছে এখন থেকেই যদি বিএনপিকে চেপে না ধ’রা যায় তাহলে বিএনপি একটি আ’ন্দোলনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টিও এখন একটি বড় ইস্যু হয়ে আসছে। আগামী এক মাসের মধ্যে জামিন সংক্রান্ত বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই রাজনীতিতে কর্তৃত্ব এবং শক্তি দেখানোর একটি প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে যেটি সামনে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে।