সেপাল নাথ, ছাগলনাইয়া (ফেনী) প্রতিনিধিঃ ছাগলনাইয়া উপজেলার শত বৎসরের ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ বল্লভপুর জামে মসজিদ দ্বিতীয়বার সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। ৩০ অক্টোবর শুক্রবার বাদ জুমা প্রধান অতিথি হিসেবে মসজিদটির সম্প্রসারণ কাজ শুভ উদ্বোধন করেন মসজিদের মোতয়াল্লী নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব এম.এ. কাশেম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৬ শতাধিক মুসল্লী অংশ নেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মসজিদের মোতয়াল্লী নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব এম.এ. কাশেম মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আসুন আমরা সবাই মিলে এই ঐতিহাসিক মসজিদের সম্প্রসারণ, পরিচালনায় ও সংরক্ষণে অংশগ্রহণ করি।
এলাকাবাসী জানান, শত বৎসর পূর্বে ১৯০৮ সালে মরহুম মুনসি খান বাহাদুর রহিম বক্স এর স্ত্রী প্রখ্যাত দানবীর বিবি মেহেরুন্নেছা মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনের তাগিদে ১৯৮১ সালে মরহুম মৌলভী মোঃ ছালেহ এর উদ্যোগে এলাকাবাসীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও এম.এ কাশেম এর সক্রিয় সহযোগিতায় মসজিদটি সম্প্রসারণ করা হয়। মোতয়াল্লী নিয়োগের নিয়মানুসারে বিবি মেহেরুন্নেছার দুই মেয়ে বিবি রহিমুন্নেছা ও বিবি ফয়জুন্নেছা উভয়েই একত্রে মোতয়াল্লী ছিলেন। বিবি রহিমুন্নেছার অবর্তমানে উনার সুযোগ্য পুত্র মরহুম স্যার এ.এফ রহমান ও বিবি ফয়জুন্নেছা মোতয়াল্লী ছিলেন। উল্লেখ্য যে, মরহুম স্যার এ.এফ রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙ্গালী ভাইস-চ্যান্সেলর এবং বিবি ফয়জুন্নেছা জলপাইগুড়ির নবাব মোশারফ হোসেনের স্ত্রী ছিলেন। মসজিদটি পরিচালনার জন্য বিবি মেহেরুন্নেছা ৩০৪ বিঘা জমি (বাংলা বাজারস্থ) ওয়াকফ দলিলের মাধ্যমে দান করেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় উক্ত জমি অন্যের দখলে চলে যায়। যাহা অদ্যাবধি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মসজিদের বর্তমান মোতয়াল্লী এম.এ কাশেম এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উক্ত জমি উদ্ধারের নিমিত্তে আদালতের শরনাপন্ন হলে অধিকাংশ রায় মসজিদের পক্ষে পাওয়া যায়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
বেগম ফয়জুন্নেছা সিলেট সুরমা চা বাগান থেকে এক সময় মসজিদের মাসিক সাহায্য বা ইমাম ও মুয়াজ্জিনের বেতন আসতো। প্রায় ৪০বছর যাবত সেই সহযোগিতা আসা বন্ধ রয়েছে। মসজিদটি বর্তমানে এম.এ কাশেম এর একক প্রচেষ্টায় ও আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে। মসজিদের নিজস্ব কোন তহবিল না থাকায় এবং বর্তমান মোতয়াল্লীর অনপস্থিতিতে ভবিষ্যত মসজিদ পরিচালনায় যাতে আর্থিক সংকটে পড়তে না হয় সে জন্য বর্তমান মোতয়াল্লী এম.এ কাশেম ছাগলনাইয়া পৌর শহরের একটি মার্কেটে দুইটি দোকান খরিদ করে মসজিদের নামে দান করেছেন। উক্ত দোকানের ভাড়া হতে মসজিদের মাসিক খরছ যাতে মেটানো যায়।