আগামী অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় নির্বাচনের পরিকল্পনা ঘোষণার সাথে সাথেই রাজনৈতিক দলগুলো তৎপর হয়েছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত মনোনয়ন বোর্ডের সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কারা মনোনয়ন পাবে আর কারা পাবে না, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনির্দিষ্ট একটি নির্দেশনা জানিয়ে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন ‘চলমান শুদ্ধি অভিযানের আলোকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংক্রান্ত গাইড লাইন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।’ ঐ নেতা বলেছেন, এই গাইড লাইনে মোটা দাগে ৫টি বিষয় থাকছে এর মধ্যে রয়েছে-
১। ত্রাণ আত্মসাৎকারীরা মনোনয়ন পাবেন না
গত মার্চ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ধরণের প্রনোদনা প্যাকেজসহ, দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যাপক ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী গ্রহণ করেন। কিন্তু কিছু কিছু স্থানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন। দেড় শতাধিক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ত্রাণ চুরির অভিযোগ ওঠে। এদের বরখাস্ত করা হয়। অনেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হন। এদের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত হয়ে এ ধরণের অপকর্মের সংগে জড়িয়েছিলেন, তারা আর মনোনয়ন পাবেন না।
২। অন্য দল থেকে বিশেষ করে জামাত-বিএনপি থেকে আগতরা
২০০৮ সাল থেকে বিএনপি ও জামাত থেকে অনেকেই আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় পর্যায়ে এই অনুপ্রবেশ অনেক বেশী হয়েছে। গত ইউপি ও পৌরসভা নির্বাচনেও এধরনের কিচু ব্যক্তি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এবার এই পথ একেবারে বন্ধ করে দেয়া হবে। জামাত-বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী কেউ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না।
৩। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসার অভিযোগ
ইউপি বা পৌরসভায় মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুকদের ক্লিন ইমেজের হতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বা মাদক ব্যবসার অভিযোগ আছে তাদের এবার মনোনয়ন দেয়া হবে না।
৪। তরুণ, উদ্যমী
স্থানীয় সরকারের মনোনয়নে আওয়ামী লীগ এবার প্রাধান্য দেবে তরুণ এবং উদ্যমীদের। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব যেন উঠে আসতে পারে। দীর্ঘদিন তারা যেন সেবা দিতে পারেন, এমন কর্মঠ তরুণদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে মনোনয়নে।
৫। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়
মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়দের প্রাধান্য দেয়া হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি সারা দেশে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে জরিপ পরিচালনা করেছেন। এই জরিপ মনোনয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।