সুশীল দাশ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারে ফারহানা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধুকে ৩৭দিনের শিশুসহ অবুজ শিশু ও ৫বছরের আরেক সন্তান রেখে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ১০সেপ্টেম্বর (বৃহস্পিতবার) মৌলভীবাজার সদর উপজেলার (গিয়াসনগর ) গোমড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মৃতদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে প্রেরন করে।
ফারহানার পিতা সঞ্জব আলী বাদী হয়ে পরদিন ১১সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিহত ফারহানার স্বামী রুমেল আহমদ,হোসাইন আহমদ,জেসমিন বেগম,সীমা বেগম সর্ব সাং: গোমড়া,থানা ও জেলা মৌলভীবাজারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ০২জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১২/২১৫,তারিখ:১১/৯/২০২০।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সামছুল ইসলাম ও চেয়ারম্যানসহ মৌলভীবাজার সংসদ সদস্যের বাড়িতে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠকের পর মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। দেড় বছর পূর্বে ফারহানা আবার নির্যাতনের স্বীকার হয়। এব্যাপারে দুইবার মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগ হয়েছিল ও পুলিশ ফারহানাকে উদ্ধার করেছিল। পরে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তিও হয়। এরপর খলিলপুর ১নং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বাড়ি ও গিয়াসনগর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতেও সালীশি বৈঠকে মিমাংসা হয়।মিমাংসা হয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং রাতে ফারহানা (স্বামী) ০১৭১৭-৭৯৫৩৪৭ নম্বার থেকে তার মায়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বার ০১৭৪৬-৭৩০২৩৩ তে কল দেয় এবং চিৎকার করে বলে শ্বশুর বাড়ির লোক তাকে মারধর করছে।
তার মা বাবা আতঙ্কিত হয়ে পরের দিন মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গেলে দুপুরের দিকে মেয়ের শ্বশুর হোসাইন আহমদ সঞ্জব আলীকে মারতে আসেন ও গলাধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন।গৃহবধুর ফারহানার পরিবারের দাবি শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয় মৃত্যুর পর স্বামী রুমেল আহমদ ও তার পরিবার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গিয়ে স্ত্রীর মাথায় সমস্যা,কবিরাজি ও ডাক্তারী চিকিৎসা করানোর বক্তব্য দিয়েছেন। যাহা নিজেদের রা ও সাজানো নাঠক বলে অভিযোগ করেন ফারহানার পরিবার। জানা গেছে,একটি প্রভাবশালী চক্র পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচেছ। মামলার এজহারে জানা যায় গত ১৩নভেম্বর ২০১৪ ইং ফারহানা সাথে র”মেল আহমদের বিয়ের পর থেকে দাম্পত্য জীবেন বহুবার (সীমা স্বামীর বোন,শ্বশুর,শ্বাশুরী ও স্বামী) দ্বারা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ও বহুবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকে ঘটনার বিষয়ে অবগত আছেন।
শুধু তাই নয় ফারহানা বেগমের সাথে দেখা করতেও দেয়নি। এর দুদিন পর ১০সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং সকাল ৬ঘটিকার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খবর আসে ফারহানা বেগম মারা গেছে। মেয়ের ম”ত্যুর খবর শুনে ফারহানা বেগমের পিতা সঞ্জব আলী আতœীয় স্বজন এবং মানবাধিকার কর্মী মিসেস ফাতেমা পপি সহ ঘটনা¯’ল মেয়ের শ্বশুড় বাড়িতে উপস্তিত হয়ে বসতঘরের সামনের কে লাশ দেখেন। ফারহানা বেগমের শরীরে জখমের চিহ্ন দেখতে পান। এ সময় ফারহানা বেগমের এক কানে দুল আছে,অপর কানে দুল নাই। কাপড় ভেজা এবং লাশে ধ¯-াধ¯ি-র চিহ্ন রয়েছে। মেয়ের শয়নকওে বাথর”মে বাশেঁর লাঠি এবং বাথর”মের বেচিং এর উপর গ¬াস ভাঙ্গা রয়েছে।
এ সময় মেয়ের শ্বশুর মামলা না করার জন্য হুমকি-দামকি দেন ও কথা কাটাকাটি বিবাদসৃষ্টি করেন। ফারহানা বেগমের বিয়ের পর হইতে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য সঞ্জব আলীর উপর চাপ স”ষ্টি করে ও ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৪লাখ টাকা দিতে বাধ্য করেছে।
তার পর ও থেমে থাকেনি হত্যাকারীরা। কিছু দিন পর আবারো গত ১সেপ্টম্বর ২০২০ইং ব্যবসা করার জন্য ৭ লাখ টাকা দাবী করেছিল। সঞ্জব আলীও তার পরিবার অপরাগতা প্রকাশ করায় প্তি হয়ে এই ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে বলে ফারহানার পরিবারের দাবী। ফারহানার পিতা মামলার বাদী মো: ইয়াছিননুল হক ও তার পরিবার আরো জানান, ৩৭দিনের শিশু ও ৫বছরের ছেলের নিরাপত্তা ও সুরার স্বার্থে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য আবেদন জানান।
এব্যাপারে মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়াছিনুল হক বলেন,এ ঘটনায় ৩জনকে গ্রেফতার ও বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন আছে।