নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
করোনা পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন কবে চলবে চূড়ান্ত না হলেও, সংক্রমণ রুখতে রেল কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত কয়েক মাসে শিয়ালদহ ডিভিশনে এসে পৌঁছেছে আই সি এফ এবং বম্বার্ডিয়ারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি উন্নত প্রযুক্তির লোকাল ট্রেনের ছ’টি আধুনিক রেক। কামরায় মুক্ত বাতাস চলাচল বাড়াতে ওই রেকের ছাদে অনেকটা মেট্রোর বাতানুকূল যন্ত্রের ধাঁচে তৈরি করা আছে বিশেষ রুফ মাউন্টেড এয়ার প্যানেল। যা ঘণ্টায় প্রায় ১৬ হাজার ঘনমিটার মুক্ত বাতাস কামরায় ঢোকার সুযোগ করে দিতে পারে।
এ ছাড়া স্টেনলেস স্টিলের তৈরি রেকগুলিতে যাত্রীদের আসনের মধ্যেও দূরত্ব বেশি। ফলে যাত্রীরা অনেকটা খোলামেলা পরিবেশে বসার সুযোগ পাবেন বলে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি। আরও রেক আসার কথা শিয়ালদহ ডিভিশনে। মুম্বইয়ে শহরতলির ট্রেনে বছর দেড়েক আগেই এই রেকের ব্যবহার শুরু হয়। শিয়ালদহ ডিভিশনে আই সি এফ এবং একটি ভারতীয় সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি রেক চলছে।
ওই রেকও যথেষ্ট আধুনিক। তবে করোনা আবহে এই নতুন রেকগুলি বিশেষ কার্যকর হতে পারে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা। ইতিমধ্যেই এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরার প্রযুক্তিতে বদল আনার কাজ শুরু করেছে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি। নতুন প্রযুক্তিতে বাইরের টাটকা বাতাস কামরায় ঢোকানোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। আই সি এফ এবং বম্বার্ডিয়ারের তৈরি লোকাল ট্রেনের কামরাগুলি সেই নিরিখে প্রযুক্তিগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও নতুন রেকগুলিতে যাত্রীদের বসার আসনগুলির মধ্যে দূরত্ব আগের তুলনায় অনেকটা বেশি। ট্রেন ছাড়ার পরে কামরায় জিপিএস নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তিতে প্রত্যেক স্টেশনের নাম স্বয়ংক্রিয় ভাবে ঘোষণা হয়। ফলে যাত্রীরা গন্তব্যের কাছাকাছি এলে সচেতন হতে পারেন। পুরনো লোকাল ট্রেনের তুলনায় ওই রেকগুলি হালকা। সর্বাধিক ১১০ কিলোমিটার গতিতে এই সব রেক চলতে পারে। কামরায় যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য এলইডি আলো, ডিসপ্লে বোর্ড ছাড়াও মহিলা কামরায় সিসি ক্যামেরাও থাকছে। তবে কামরায় টাটকা বাতাস ঢোকানোর প্রযুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রেল কর্তারা। যাত্রীদের সংখ্যা বাড়লে প্রয়োজন অনুযায়ী রুফ মাউন্টেড ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত পাম্পের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে কামরায় বিশুদ্ধ বাতাসের পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যায়। নতুন রেকগুলির সব ক’টি ১২ কোচের।