ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সোমবার গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় চার কিলোমিটার অংশ। সেখানে বেরিবাঁধের উপর আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোকে নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অতুল সকার।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলার ৭ টি উপজেলায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ৫১৯ গ্রামের ৩৮ হাজার ৩৬৯ টি পরিবারের ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৬১ জন মানুষ বন্যা কবলিত রয়েছে। এরমধ্যে জেলা সদর, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিনি জানান, দূর্গতদের জন্য ৩৪ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। করোনা কালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন সকলে অবস্থান করে সে কারণে বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, পৌরসভার বর্দ্ধিত ২৫ নং ওয়ার্ডের ভাজনডাঙ্গা কালিতলা মোড় হতে আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গি পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পদ্মা তীর সংরক্ষণ বাঁধের এই অংশে বিভিন্নস্থানে ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় বাঁধের উপর আশ্রয় নেয়া লোকজনকে দ্রুত নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশের কোথাও মাটি সরে গেছে। এসবস্থানে পানি চুইয়ে বের বাঁধ ধ্বসের আশংকা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাঁধ সংরক্ষণে।
এদিকে, আলিয়াবাদ ইউনিয়নের সাদিপুরে বাঁধের ডুবে যাওয়া অংশের বসতিরা বাঁধ কেটে পানি অপসারণের হুমকি দিচ্ছে। সেখানে বাঁধ রক্ষায় পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে। বন্যাকবলিত বিভিন্নস্থানে মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে ঘরের মধ্যে উঁচু মাচা করে বসবাস করছেন। গবাদি পশু নিয়েও তারা বিপাকে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রোববার জেলায় এক হাজার মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার ও শতাধিক পরিবারে শিশু খাদ্য বিতরণ করেন। এপর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৬৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ টাকা, ২৬শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার ও পর্যাপ্ত শিশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে