মো: মাসুদ রানা,কচুয়া:
চাঁদপুরের কচুয়ায় দারিদ্রতাকে দমাতে পারেনি মহিউদ্দিনকে। কচুয়া উপজেলার পালাখাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পায় সে। দরিদ্র হলেও জীবন যুদ্ধে থেমে যায়নি মহিউদ্দিন। এর আগে ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে এ গ্রেড পায় মহিউদ্দিন।
জানা গেছে, শুধু মহিউদ্দিন নয়,তার বাবা পেশায় একজন চা বিক্রেতা। এক পরিবারে চারজন সদস্য হলেও ছেলের এমন সাফল্যে এলাকার সবাই খুশি।
পরিবার ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেতে হবে- এটাই ছিল মহিউদ্দিনের ইচ্ছা আর স্বপ্ন। স্বপ্নপূরণে কোনো বাধাই থামাতে পারেনি তাকে। অসম্ভবকে সম্ভব করে মেধার সাক্ষর রেখে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায় সে। মহিউদ্দিন কচুয়া উপজেলার পালাখাল গ্রামের দক্ষিন পাড়া মো. আব্দুল হালিমের ছেলে। আব্দুল হালিম একজন চা বিক্রেতা। তার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্যতায় ভুগছেন।
মহিউদ্দিনের মা নয়ন বেগম বলেন, মহিউদ্দিন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ নিয়ে আমরা খুশি। দারিদ্রতার সাথে ছেলেটি সংগ্রাম করে এতদূর এসেছে। তবে ছেলের ফলাফলে খুশি হলেও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। কারণ ছেলের স্বপ্নপূরণ করতে হলে ভালো কলেজে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু তাকে ভালো কলেজে ভর্তি করার সামর্থ্য নেই আমাদের। এজন্য তার কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত।
হতাশা নিয়ে নয়ন বেগম আরো বলেন, একটি ভালো কলেজে দিতে গেলে সেখানে তার অনেক টাকা প্রয়োজন। এ কারণে মহিউদ্দিনকে নিয়ে ভর্তির অনিশ্চিতায় ভুগছি। কীভাবে ছেলেকে লেখাপড়া করাব তা ভেবে পাই না।
মহিউদ্দিনের বাবা আব্দুল হালিম চা বিক্রেতা । চা বিক্রি করে যা উপার্জন হয় তাই দিয়ে সংসার চলে। এরপরও কষ্ট করে ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে নেন।
মহিউদ্দিনের বাবা আব্দুল হালিম আরো বলেন, ছেলের স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তবে আর্থিক ভাবে দূর্বলতা হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার হওয়া তার পক্ষে অসম্ভব।
পালাখাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো: মিজানুর রহমান বলেন, দরিদ্র মেধাবী মহিউদ্দিন স্কুলে থাকা অবস্থায় আমরা অনেক সহযোগিতা করেছি। আমরা মহিউদ্দিনের সাফল্য কামনা করি। মহিউদ্দিনের স্বপ্নপূরণ করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহŸান জানান তিনি।