মোঃ ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সারা বিশ্বব্যাপী আতংকের নাম করোনা ভাইরাস, যার জন্য মানুষ ঘরে বন্দি ৷ ঠিক এই সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু হায়াত নুরুন্নবী তার ফেসবুক টাইমলাইনে করোনা ভাইরাসে আমাদের করনীয় কি? এই সম্পর্কে লিখেছেন , তার উক্ত লেখাটি হুবুহু তুলে ধরা হল ৷
এমন আশা করা যাবে না যে, ঘুম থেকে উঠে শুনব কোভিড১৯ পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে চির বিদায় নিয়ে গেছে। আসুন এখন সবাই বের হই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাই।
এইডসর কথা আমরা সবাই জানি। এটার প্রতিষেধক এখনও বের করতে পারেনি বিজ্ঞানীরা।
এই অসুখের একটাই প্রতিষেধক আর তা হলো, এইডস রোগীর সংস্পর্শে না আসা।
প্রতিবছরই প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ এইডসে মারা যাচ্ছে পৃথিবী জুড়ে।
কোভিড১৯ ঠিক এরকম হয়েই দাঁড়াতে পারে যতদিন না এটার প্রতিষেধক বের হচ্ছে। তবে কোভিড১৯ এর বিষয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি। যেমন পৃথিবী জুড়ে এটা আঘাত হেনেছে, ঠিক তেমনি পৃথিবী জুড়ে চেষ্টা চলছে প্রতিষেধক তৈরীর, সফলতাও অনেকটাই এগিয়ে গেছে প্রায় দ্বারপ্রন্তে।
এখন আমাদের সামনে প্রশ্ন, কি করণীয় আমাদের?
কবে প্রতিষেধক বের হবে তার সঠিক দিন তারিখ আমাদের সামনে নেই।
ততদিন বা অনির্দিষ্ট সময় ধরে লকডাউন করে স্থবির হয়ে থাকবে দেশ ও পৃথিবী..!! আমরা সবাই কি করব?
করোনা আতংকেই হোক আর স্বভাবগত কারনেই হোক, সব কিছুতেই নেতিবাচক দৃষ্টি আমাদের একটু বেশি।
তাই যে যাই করছে, সাথে সাথেই চারিদিকে গেল গেল গেল রব উঠছে।
একজনের একটা লেখা পড়ছিলাম খুব ভাল লেগেছে লেখাটা। তার লেখার কিছু কথা আমার লেখায় টেনে এনেছি।
কেউ রান্না করে সোস্যাল মিডিয়ায় খাবারের ছবি দিলে, সাথে সাথে গেল গেল …আবার কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না তাতেও গেল গেল রব।
আরে ভাই মানুষ রান্না বান্না বন্ধ করে দিলে তো চাহিদা আরো কমে যাবে। তখন কৃষক তার ন্যায্য মূল্য পাবে কি করে?
কেউ রেস্টুরেন্ট খুলেছে, সাথে সাথে সাথে সাথে একি অবস্থা।
একবার কি ভেবেছি এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে কত গুলি পরিবার জড়িত?
কেউ অফিস খুললে বাকা চোখে দেখছি। কর্মচারীদের বেতন না দিলেও সেটা দোষের … কর্মচারি ছাঁটাই করলে তো কথাই নাই, সব খানেই একি শব্দ গেল গেল।
সরকার মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সাথে সাথে একি কথা।
কেউ তার কল কারখানা খুলেছে, তাতেও একি শব্দ।
সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই কিন্তু এগুলো আমাদের খুব তাড়াতাড়ি শুরু করতে হবেই।পৃথিবীর ধনী দেশ গুলিও কিন্তু আস্তে আস্তে শুরু করছে। তারা কিন্তু কেউ এখনো করোনা জয় করেনি।
আমাদের দেশে কতদিন আপনি ত্রান দিয়ে বসিয়ে খাওয়াতে পারবেন? আস্তে আস্তে প্রতিটা সেক্টরে মানুষ কর্মহীন হয়ে পরবে।
উদাহরণ হিসাবে ধরুন যদি আজ থেকে আমরা করোনার ভয়ে গরুর মাংস না কিনি, তাহলে কসাইয়ের কাজ নেই… গরু যারা ঢাকায় ট্রান্সপোর্ট করে, তাদের কাজ নেই… গরুর খামারিদের কাজ নেই… গরুর খাবার যারা বানায়, তাদেরও কাজ নেই। যদি গরুর হাট গুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়, কৃষক তার গরু বিক্রয় করতে পারবেনা কৃষি কাজে সে অর্থ বিনিয়োগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাতে কৃষি উৎপন্ন ব্যাহত হবে। এদিকে যারা সরকার কে কোটি কোটি টাজা রাজস্ব দিয়ে হাট/বাজার গুলি ইজারা নিয়েছে তারা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরবে। দেখুন পুরোটাই একটা চেইনের মধ্য দিয়ে যায় এটাই চিত্র। এভাবে প্রতিটি সেক্টর একি ভাবে একে অপরের সাথে জড়িত।
এখন আমরা যদি সামাজিক দূরত্ব মেইন্টেইন করে কাজগুলো শুরু না করি। তাহলে কিন্তু আমরা আস্তে আস্তে পিছিয়ে পরবো, মানুষ আরো বেশি কর্মহীন হয়ে পরবে। তখন কিন্তু মানুষ অনেক বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠবে। কারন ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে করোনা বা সামাজিক দূরত্ব আর লকডাউন অর্থহীন হয়ে উঠবে।
এটা মাথায় রেখেই আমাদের নিউ লাইফ স্টাইল গ্রহন করে জীবন শুরু করতে হবে।
তাই বলে ভেবে নিবেন না, আমি সবাইকে এটা মেনে নিয়ে কালকেই বের হয়ে আসতে বলছি।
এই নিউ লাইফ স্টাইল গ্রহন করতে হলে, সবার আগে দরকার হবে আপনি-আমি সহ সমাজটাকে প্রস্তুত করা। স্বাস্থ্যবিধি গুলির উপর যত্নশীল হওয়া, মেনে চলতে হবে মানাতে হবে সবাই কে, এই সামাজিক আন্দোলন তৈরী করা।
সেই সাথে আমাদের মানসিকতাটাও বদলাতে হবে… যার টাকা আছে তারা খরচ করছে করুক।
তাতে সমাজেরই উপকার হচ্ছে, ত্রান বা সহযোগীতা যেটাই বলুন না কেন সেটা গ্রহনকারীর তালিকা কমে আসবে। মানুষের সম্মানজনক আয়ের পথ খুলবে।
ধরেই নিন করোনা আমাদের সাথে কয়েক বছর থাকবে, আর সেটার প্রস্তুতি আমাদের এখন থেকেই নিতে হবে।
তাই দয়া করে সব কিছু নেতিবাচক ভাবে না দেখে
প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করি। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনমত তৈরী করি।
আর যদি সেটা করতে পারি, তবে তাতেই সবার মঙ্গল।
বিশ্বের প্রতিটি দেশই ভাবা শুরু করে দিয়েছে এই নতুন লাইফ স্টাইল কিভাবে এডপ্ট করবে।
আমাদেরকেও এখনই শুরু করতে হবে কারণ আগের মতো নর্মাল লাইফ খুব সহজে ফিরবেনা। উন্নত বিশ্বের তুলনায় আমদের মত ঘনবসতি পূর্ন দূর্বল অর্থনীতির দেশে বিষয়টা আরো অনেক বেশি কঠিন হবে। তবে প্রয়োজন কে চ্যালেঞ্জ হিসাবেই নিতে হবে। জীবন বাঁচাতে চ্যালেঞ্জ ছাড়া উপায় নেই।
এখন যত তাড়াতাড়ি পারি তাতেই সবারই মঙ্গল।
শুধু এটা বলার জন্যই আজকের এই লেখা।
খুব দ্রুত করোনা প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক বিশ্ব পাবে সেই আশা করছি। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন সবাই। অসুস্থ পৃথিবী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের সকলের চাওয়া।