রাকিবুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া নদীর পানি ধীরগতিতে কমতে থাকলেও পানি উন্নয়নের বোর্ডের বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়ন সর্ম্পূণভাবে বন্যা কবলিত। ইউনিয়নগুলোর অধিকাংশ রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানির নীচে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে অর্ধশতাধিক স্থানে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এসব এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, নদী ভাঙ্গনে বেশ কিছু বসতবাড়িসহ শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া বন্যায় আমন বীজতলা, রবি ফসলসহ পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উপজেলার পৌরশহর, নাকাইহাট, হরিরামপুর, শিবপুর, কোচাশহর, মহিমাগঞ্জ, শালমারা, তালুককানুপুর, সাপমারা, গুমানীগঞ্জ ও ফুলবাড়ী ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি কমতে থাকতে শুরু করেছে, কিন্তু বন্যা দুর্গত এলাকাগুলিতে নিন্ম আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে পশু খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় গোবাদি পশু নিয়েও টেনশনে পড়েছে ভুক্তভোগীরা।
দুর্গত এলাকার বানভাসিদের মাঝে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে নির্বাহী অফিসার রাম কৃষ্ণ বর্মনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ত্রাণ বিতরণ করছেন। কিন্তু বানভাসিদের অভিযোগ চাহিদার তুলনায় ত্রাণের পারিমাণ খুবই কম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বন্যাদুর্গত গাইবান্ধার সাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন এবং জ্বালানি সংকট রয়েছে। পানিবন্দি মানুষের দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। পাশাপাশি ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া পরিবারগুলোকে রাত জেগে ডাকাত পাহারা দিতে হয়।
জুমারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোস্তম আলী বলেন, বন্যার পানিতে ১৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। ব্যাপক ফসল ও শাক-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন এবং জ্বালানি সংকট রয়েছে।
এদিকে সোমবার দুপুরে জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়ায় বন্যার পানিতে ডুবে লাজুক মিয়া (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।