মাহিন ফ্রান্স ……
আমার দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সিনিয়র সাংবাদিক ও গণমাধ্যম অঙ্গনের সাহসী মুখ অলিউল্লাহ নোমানের প্যারিসে আগমন উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে এক শুভেচ্ছা চা চক্রের আয়োজন করা হয়।
চা চক্রটি অনুষ্ঠিত হয় প্যারিসের স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে। এতে প্যারিস প্রবাসী সাংবাদিক, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অতিথির আগমনে পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
গতকাল ১৯ মে ২০২৫ সোমবার অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক বাংলাদেশ সাংবাদিক ইউনিয়ন ফ্রান্সের চেয়ারম্যনা আবদুল মান্নান আযাদ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ফ্রান্স বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাহাবুব হোসাইন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য মোহাম্মদ খান, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার জাকির কিবরীয়া, ইউকের বেসরকারি খাতের অর্থনীতি উপদেষ্টা এস মহিউদ্দিন আহমেদ, মিডিয়া এক্টিভিস্ট মীর জাহান, ফ্রান্সের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ফ্রান্স বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও বাংলাভিশন ফ্রান্স প্রতিনিধি ইয়াসির আরাফাত খোকন, কবি নজরুল সেন্টার ফ্রান্সের কবি সুহেল আহমদ, ফ্রান্স বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মামুন মাহিন ও মোহাম্মদ আরাফাত প্রমুখ।
উপস্থিত বক্তারা সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানের সাংবাদিকতা জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং সাংবাদিকতা পেশায় তাঁর সাহসী ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অলিউল্লাহ নোমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রবাসে থেকেও দেশের গণতন্ত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে আপনাদের আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।সত্যের পক্ষে কলম চালাতে গিয়ে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়, কিন্তু বেলাশেষে জনগণের ভালোবাসাই আমাদের মূল শক্তি হিসেবেই দৃশ্যমান হয়। চব্বিশের বিপ্লব স্বার্থক করতে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির দুই প্রধান চালিকাশক্তি হলো গার্মেন্টস শিল্প ও প্রবাসী আয়ের উপর নির্ভরশীল রেমিট্যান্স। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে প্রবাসীরা যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রবাসীরা সরকারকে নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠালেও অধিকাংশ সময় অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকেন। এই অবহেলা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দাবি আদায়ে প্রবাসীদের সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রম, দক্ষতা ও মেধা দিয়ে বিদেশে সুনাম কুড়াচ্ছেন এবং বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখছেন। কিন্তু অনেক সময় বিমানবন্দর, কনস্যুলেট, দূতাবাস কিংবা সরকারি সেবাসমূহে তারা ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এই বাস্তবতায় প্রবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
উপস্থিত মেহমানরা তাদের মতামত দিতে যেয়ে বলেন, রেমিট্যান্স পাঠানোর পাশাপাশি প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে প্রবাসীদের নিজেদের মধ্যে দলাদলি, বিভাজন ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে জাতীয় স্বার্থে ঐক্য গড়ে তোলা জরুরি। জাতীয় উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হলে, তাদের সম্মান ও অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং বাস্তবভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ
সময়ের ঐতিহাসিক দাবী।
চা চক্র শেষে সবাই প্যারিসে অবস্থানরত স্থানীয় অভিবাসীদের খোঁজ খবর নেন। আয়োজনটি হয়ে ওঠে এক আনন্দঘন প্রবাসী মিলনমেলা।