ঢাকাবুধবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  1. অভিযোগ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আটক
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আবহাওয়া
  7. আলোচনা সভা
  8. ইতিহাস
  9. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  10. কক্সবাজার
  11. কচুয়া
  12. কবিতা
  13. কিশোরগঞ্জ
  14. কুড়িগ্রাম
  15. কুমিল্লা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হাইমচরে বাজাপ্তী রমনী মোহন উবির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ

প্রতিবেদক
admin
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ৭:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গাজী, হাইমচর,প্রতিনিধি

হাইমচরে বাজাপ্তি রমনি মহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান শিকদারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় ভুল তথ্য দিয়ে স্থানীয় মাসুদ বেপারী কর্তৃক অপপ্রচার করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকার ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য হাইমচর থানায় একটি অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক ।

বাজাপ্তি রমনি মহন উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানাজায়, প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান ২০১০ সালে ২২ ডিসেম্বর বাজাপ্তী হাইস্কুলে যোগদান করেন। ঐসময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারীর বড় ভাই নুরুল আমিন পাটোয়ারী। নূর হোসেন পাটওয়ারীর ভাই প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না পাওয়ায় তখন থেকে তিনি মান্নান মাস্টারের বিরুদ্ধে লেগে থাকেন এবং সকল কাজে অসহযোগিতা করেন। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে বলা হচ্ছে নূর হোসেন পাটোয়ারীর সুপারিশে মান্নান মাস্টার প্রধান শিক্ষক হয়েছেন। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজনকালীন সময় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ এবং ম্যানেজিং কমিটির অনুরোধে প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন পাটোয়ারীর সাথে স্কুলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তখন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি বিদ্যালয়ে একটি প্রজেক্টর এবং একটি ল্যাপটপটপ দেওয়ার ঘোষণা দেন। স্কুলের স্বার্থে প্রধান শিক্ষক চাকুরির সাত বছর পর উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে সমন্বয় করতে বাধ্য হন। বাজাপ্তী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন বা উপজেলা চেয়ারম্যান এর নির্দেশে বা অনুরোধে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। ঐসময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কথার বাহিরে গিয়ে চাকুরি করা প্রায় অসম্ভব ছিল। ঐসময়ের ছবি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন।
হাইস্কুলে নিয়োগ দেওয়ার জন্য একটি নিয়োগ বোর্ড আছে এবং ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ দেন, এখানে প্রধান শিক্ষকের একক কিছু করার সুযোগ নেই। তার পরও প্রধান শিক্ষকের আমলে দুইজন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। একজন ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি জয়নাল মাস্টারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম এবং অপরজন ক্রীড়া শিক্ষক জয়ন্ত মজুমদার। তখন শুধুমাত্র হাইমচরে নীলকমল হাই স্কুলে ক্রীড়া শিক্ষক ছিল আর কোথাও ক্রীড়া শিক্ষক পাওয়া যায়নি। কমিটির অনুরোধে জয়ন্ত মজুমদার আবেদন করেছিল।
এছাড়া আল-আমিন নামে সহকারী লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ হয়েছে, যিনি তৎকালীন সময় থানা ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে যুবদলের সদস্য।
ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম সাহেবের জমিতে দোতলা ভবন করার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা এই প্রধান শিক্ষক যোগদান করার আগে নির্মিত হয়েছে। বিল্ডিং এর কাজ শুরু হয়েছে ২০০৮ সালে এবং হস্তান্তর হয়েছে ২০১০ সালের জুন মাসে আর প্রধান শিক্ষক যোগদান করেছেন ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর। আর জমির বিষয়ে যতটুকু জানা যায় যে, ১৯৯৪-৯৫ সালে স্কুল টি যখন লাল ক্ষার দোকান থেকে এর বাজারে স্থানান্তরিত হয় তখনকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব ২ কড়া জমির দাম দিতে রাজি হন, তবে জমিটুকু এখনো ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের নামেই আছে, স্কুল দলিলকে করে দেয়া হয়নি। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং প্রধান শিক্ষক বার বার অনুরোধ করা পরেও দেই-দিচ্ছি বলে দলিল করে দেয়া হয়নি। আর হাছান ইমাম মাসুদ স্কুলের নামে যে ২ শতাংশ জমি দলিল করে দিয়েছেন তা মূলত ১৯৯৪-৯৫ সালে স্কুল স্থানান্তরে সময় ৬ কড়া জমি ১২,০০০/ টাকা দাম নির্ধারণ করে ৬,০০০/ টাকা স্কুলের নামে বায়না করা। বর্তমান প্রধান শিক্ষক যোগদান করার পর অবশিষ্ট ৬,০০০/ মাসুদ সাহেবের কাছে দেয়া হয় জমির মালিকের সাথে কথা বলে জমিটুকু দলিল করার ব্যবস্থা করতে। তিনি পাঁচ ছয় মাস পর স্কুলের টাকা ফেরত দিয়ে বলেন জমির মালিক পূর্বের দামে জমি দিবে না বর্তমান দামে হলে দলিল করে দিবে। এরপর ২০২২ সালে সে উক্ত জমির এক ওয়ারিশ এর কাছ থেকে গোপনে দুই শতাংশ জমি নিজের নামে দলিল করে নেন এবং পরে স্কুলের নামে দানপত্র দলিল করে দেন, কিন্তু বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা ২০০৯ ধারা ২ এর (চ).২ অনুসারে ম্যানেজিং কমিটির আজীবন দাতা হতে পারেননি। তিনি এই দোষ আমার উপর চাপিয়ে এলাকায় ঘোষণা দেন তিনি বাজাপ্তী হাই স্কুলের সভাপতি হয়ে মান্নান মাস্টারকে হেডমাস্টার থেকে বাদ দিবেন। ২০১৪ সালে যখন তিনি সভাপতি প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন তখন থেকেই নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। ২০১৫ সালে তার জেঠাতো ভাই কে দিয়ে এখনকার মতো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় নিজে তার শুনানি করেন এবং অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও হয়রানি মূলক প্রমাণিত হওয়ায় তিনি তার অভিযোগ টি মুসলেকা দিয়ে প্রত্যাহার করেন। যা ইউএনও মহোদয়ের রিপোর্টে উল্লেখ আছে।

স্থানীয়রা জানান, অভিযোগকারী হাসান মাসুদ নিজে এলাকার স্বীকৃত আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তার বাবা ছিলেন একজন আওয়ামীলীগার যিনি এই বাজাপ্তী স্কুলে সদস্য হতে না পেরে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক খগেন্দ্র চন্দ্র মন্ডলকে ছাতা দিয়ে মেরেছিলেন বলে অভিযোগ আছে।। তার বড় ভাই সোহেল ইতালি তরিনো শাখা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, সে নিজে যুবলীগ নেতা বলে জানা যায়, এবং ১ নং নয়ানী কেন্দ্রে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও ভোট চুরির হোতা। সে তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে প্রত্যেকটি নির্বাচনে কেন্দ্রে এ সকল অপকর্ম চালিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রামে রিরোলিং মিলে গ্যাস দায়ে জেলও খেটেছিলেন।

তার ছোট ভাই মামুন গাজী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং মামুন বাহিনীর প্রধান। তার দাপটে এলাকায় কোন লোক কথা বলতে সাহস পেত না। মামুন একবার এরেস্ট হয়ে জামিনে এসে আবারও তার অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার সর্বকনিষ্ঠ ভাই মহিবুল্লাহ মহিব দীপু মনির মাধ্যমে প্রশ্ন আউট করে বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছে। তার নিয়োগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য এলাকাবাসী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে। তিনি ঢাকা কলেজে ছাত্র থাকাকালীন ছাত্রলীগের চিহ্নিত ক্যাডার ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।

অপরদিকে মান্নান মাস্টারের পরিবার এলাকার সর্বজন স্বীকৃত বিএনপি পরিবারের সন্তান। তাদের বাড়িতে বিএনপি’র বাহিরে একটি ভোটও নেই বলে জানান, তার একমাত্র ছেলে জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকা বাড্ডায় পুলিশের রাবার বুলেটে আরাত্মক ভাবে আহত হয়েছিল এবং তার ভাতিজা নেছার সিকদার আওয়ামী লীগের মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছিল। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ হাইমচর উপজেলা শাখার আহবায়ক, যার কেন্দ্রীয় সভাপতি ডাক্তার এ জেড এম জাহিদুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।
তারা অভিযোগ করেছে মান্নান মাস্টার মো: আলী গাজী কে বার বার সভাপতি বানিয়েছে। মোহাম্মদ আলী গাজী মোট ১১ বার সভাপতি ছিলেন এবং মান্নান মাস্টার যাওয়ার আগে ৫ বার। অভিযোগকারী মাসুদ সেই সময় তিনবার মোহাম্মদ আলী গাজীর কমিটির সদস্য ছিলেন।

প্রধান শিক্ষক মান্নান শিকদার বলেন, মাসুদ রহমান নামক ব্যক্তি বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। সে কিছুদিন পূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। সেই অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাসুদ এখন নতুন করে আমার নামে মিথ্যে ও ভূয়া তথ্য উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের পড়াতে এসেছি, সম্মান হারাতে না। এখন তার যে ভাবে আমাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ও মিডিয়ায় অপপ্রচার করছে এতে আমি পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে হেয় হচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষকতা পেশা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে। যেমনটা ঐ মাসুদ গংরা চায়।

Don`t copy text!