আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট ফরম্যাটের সাবেক নম্বর ওয়ান ব্যাটার ডেভিড মালান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না দেখে গেলেও বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টেগুলোতে দেখা যাবে তাকে। কারণ দেশি-বিদেশি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মালানের।
মালান সবশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের জার্সিতে খেলেছেন। এরপর তাকে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যায়নি। অবশ্য এর বড় কারণ ইনজুরি। তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সবমিলিয়ে ১১৪টি ম্যাচ খেলেছেন মালান। ২২ টেস্ট, ৩০ ওয়ানডে এবং ৬২টি ওয়ানডেতে তিনি রান করেছেন ৪৪১৬। যেখানে আটটি সেঞ্চুরি ও ৩১ ফিফটির সঙ্গে ৩৭.৭৪ গড়ে ব্যাট করেছেন ৩৭ বছর বয়সী এই ইংলিশ তারকা।
মালানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা খুব বড় নয়, ২০১৭ সালের জুনে অভিষেক হওয়ার পর ইতি টানলেন সাত বছরের মাথায়। অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪৪ বলে ৭৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। পরবর্তীতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে উঠেন ব্যাটারদের টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে। ওই সময়ে তিনি মাত্র ২৪ ইনিংসে দ্রুততম ১০০০ রানের রেকর্ডও গড়েছিলেন।
পরবর্তীতে আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের মধ্যে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৯১৫ রেটিংও অর্জন করেন মালান। যা ফরম্যাটটির আন্তর্জাতিক পরিসরের নিরিখে ইতিহাস গড়ে। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। সেই দলেরও সদস্য ছিলেন মালান। যদিও নকআউট পর্বে খেলতে পারেননি তিন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচে তিনি ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যান।
ওয়ানডে ফরম্যাটেও পিছিয়ে ছিলেন না মালান। এই ইংলিশ ওপেনার ২০২২ জুন থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফরম্যাটটিতে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ১৫ ইনিংসে তিনি সেঞ্চুরি করেন পাঁচটি, ফলে ৫০ ওভারের খেলায়ও তিনি হয়ে ওঠেন ইংলিশদের অপরিহার্য ওপেনার। ২০২৩ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনি ১৪০ রানের ইনিংস খেলেন। যদিও আসরটিতে ইংল্যান্ড বিদায় নেয় গ্রুপপর্ব থেকে। তবে টুর্নামেন্ট শেষে মালানই ছিলেন ইংলিশদের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ব্যাটার, এক সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটিতে করেন ৪০৪ রান।
নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়ে মালান বলেছেন, ‘২০১৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই জার্নি ছিল অসাধারণ। ইংল্যান্ডের হয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলার সুযোগ পেয়ে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। অন্য সকল খেলার মতো ক্রিকেটেও যেকোনো খেলোয়াড় আরও কিছু দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে অবসরে যায়। সেখানে তারা ১০ কিংবা ১০০ টেস্টই খেলুক না কেন, আরও একটু বেশি খেলতে না পারার আক্ষেপ ঝরে তাদের কণ্ঠে, আরও কিছু রান, আরও কিছু ট্রফি
এই মুহূর্তে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করছি। আমি সত্যিকার অর্থেই সন্তুষ্ট। এটি সহজ ছিল না। হতে পারে এটাই আমার ধরন, যে কারণই থাকুক না কেন, সবসময়ই আমি আমার জায়গা ধরে রাখার জন্য যে খেলেছি সেটি প্রমাণ করতে চেয়েছি। যা মানসিক এবং শারিরীকভাবেও প্রচুর চাপ তৈরি করে। তা সত্ত্বেও আমি পেছনে তাকাতে চাই গর্ব নিয়ে, যা আমি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’