মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের এখলাছপুর সাবপাম্পের আওতাধীন মিলারচর হানিপাড় মাঠে সেচের অভাবে বোরো ধানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার বেশিরভাগ মানুষের পেশা ধান চাষ। কিন্তু প্রতি বছর তারা শুরুতে সঠিক অনুপাতে পানি পেলেও শেষ সময়ে পানি সংকটে কাঙ্খিত ফলন পায় না।এবারও তার ব্যতিক্রম নয় দীর্ঘ একমাস যাবত তারা সেচসুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলেন।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এবার সেচ প্রকল্পের আওতাধীন সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও হানিরপাড় মিলারচর মাঠের প্রায় ২৫০ একর জমি সেচের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে দুইতিনশতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান গুলো কাইস্তোর হয়েছে কিন্তু পানির অভাবে পাতাগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। সকল জমিতে পানি না থাকায় মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। মাটি সাদা চুনের মত বর্ণ ধারণ করেছে।
মিলারচর গ্রামের কৃষক মামুন মিয়া বলেন, “পানির খুবই অভাব। আমরা টিকতে পারবো না। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। জমি দেখে আমার হাত-পা ভেঙে পড়ছে।” আমি দীর্ঘদিন যাবত পানির জন্য কতৃপক্ষকে অবহিত করছি তাদের তেমন জোড়ালো পদক্ষেপ দেখছিনা।
তবে উপসহকরী “কৃষি কর্মকর্তা মো: আলামিন ভাই এসে আমাদের জমি দেখে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার যোগাযোগ রাখছেন।
এই মাঠের কৃষক শাহাজাল জানান,”মেঘনা ধনোগদা পওর বিভাগের অবহেলার কারণে আমাদের জমির এই অবস্থা।
খালও শুকিয়ে গেছে। তাই একেবারেই পানি পাওয়া যাচ্ছে না।”
কৃষক মো: মহসিন মিয়া জানান আমরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন জমা দিয়েছি আর পানির অপেক্ষায় আছি।
অত্রমাঠের দায়িত্ব রত মোফাজ্জল হোসেন জানায়, আমরা দীর্ঘদিন ধরে পানির জন্য কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পানি দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে কিন্তু পানি সঠিক অনুপাতে আসে নাই। তিনি আরো জানান, এই মাঠটি পদ্মা পানি ব্যবস্থাপনা দলের আওতাধীন। ব্যবস্থাপনা দলের সভাপতি ছিলেন দেলোয়ার হোসেন তিনি বিদেশে চলে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছেন ইলিয়াস হোসাইন। কিন্তু তার কার্যক্রম ধীরগতি।
উপজেলা কৃষি অফিসার ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন “বোরো ধানে সেচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। তাই সব জমিতে যাতে সেচের পানি নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে প্রকল্পের অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে সেচের কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা পওর বিভাগকে অবগত করছি তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মেঘনা ধনোগোদা পওর বিভাগের একলাছপুর সাবপাম্পের দায়িত্বরত উপ সহকারি প্রকৌশলী মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি ইতিমধ্যে অভিযুক্ত এলাকা ভিজিট করেছি। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিছু জমিতে পানি ডুকছে।পর্যায়ক্রমে পানির এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমরা ভরপুর পানি সরবরাহ করে তাদের সমস্যা সমাধান করে দিবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একিমিত্র চাকমা বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার আগেই মৌখিক অভিযোগ পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করেছি। ইতিমধ্যে পানি দেওয়া শুরু হয়েছে।