ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সম্মেলন কক্ষে এক বর্ণিল, চমৎকার ও উৎসবমুখর পরিবেশে এসএসসি ১৯৯৫ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় আনন্দ র্যালী ও প্রিয় বন্ধুদের সাথে মিলিত হতে পেরে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন সেই ব্যাচের এসএসসি শিক্ষার্থীরা। এ যেন ছিল এক অভূতপূর্ব প্রাণের মিলন মেলা। সম্মেলন কক্ষে বেলা ১১ টায় পরিচিতি পর্ব দিয়ে শুরু করে, অকালে চলে যাওয়া কয়েকজন মরহুম বন্ধুর স্মৃতিচারণ করে এক মিনিট নীরবতা ও দোয়া, উপস্থিত প্রত্যকের অনুভূতি ও স্মৃতিচারণ, মধ্যাহ্নভোজ, র্যাফেল ড্র ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান, আলোচনা সভা এবং সবশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিকাল ৬.০০ টায় অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।
ধানমন্ডি বিসিএসআইআর স্কুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জাফর উল্লাহর সঞ্চালনায় অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ওই ব্যাচের শিক্ষার্থী অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আক্তার, ফারুক আহমেদ, নিজাম উদ্দিন জুয়েল, ড. শাহজাদ হুসাইন, মো. জাকির হুসেন, ডা. মাধব চন্দ্র দাস, মনির হোসেন, আল মামুন, খাদিজা আক্তার সাথী, মমতাজ মাহবুব প্রমুখ। এই অনুষ্ঠানে ঐ ব্যাচের ৬৫ জন শিক্ষার্থী ও তাদের ছেলেমেয়েদের অধিকাংশই উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সবাই অনুষ্ঠানের সব কিছু সকাল থেকে শেষ অবধি উপভোগ করেন।
বিদ্যালয়ের এই ব্যাচের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী ড. শাহজাদ হুসাইন একজন সফল ও তরুণ পরমাণু বিজ্ঞানী। সেখানে ড. শাহজাদ বলেন ১৯৯৫ সালের এসএসসির চমৎকার ও সফল একটি ব্যাচ ছিলাম আমরা। আজ দীর্ঘ ২৮ বছর পর ব্যাচের প্রায় সব বন্ধু বান্ধবীর সঙ্গে দেখা হলো। দীর্ঘদিনে আমাদের মাঝে যে গ্যাপ তৈরি হয়েছিল সেটা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এখন অনেকটাই কেটে গেছে। সবার সাথে দেখা হওয়ার এই অনুভূতি ও আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। দীর্ঘকাল পর এরকম একটা চমৎকার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে মনে হচ্ছে নতুন করে আমরা আবার সেই সুমধুর ও চমৎকার স্কুল জীবনে ফিরে এসেছি।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. জাকির হুসেন বলেন, অনেক দিন পর আজ আমরা শৈশব-কৈশোরের খোঁজে এখানে ছুটে এসেছি, স্বপ্নের দরবারে, স্মৃতির আঙিনায়। পরে জাকির তার কয়েকটি জনপ্রিয় গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে খুব জমিয়ে রাখেন।
পেট্রো বাংলার ম্যানেজার মো. ফখর উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন পর আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। স্কুল জীবনকে ঘিরে সব বন্ধু বান্ধবীদের সাথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই দীর্ঘকাল পর এরকম একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ১৯৯৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সমাজ সেবক শফিকুল ইসলাম বলেন অনেক দিন পর আমরা স্কুলের বন্ধু বান্ধবীরা এক সাথে মিলিত হয়েছি। জীবনে বাস্তবতা ও সময়ের প্রয়োজনে এখন আমরা প্রত্যেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি। সবার সাথে সব সময় মিলিত হওয়ার সুযোগ খুব একটা হয়ে উঠে না। আশা করি আগামীতেও আমরা এরকম পুনর্মিলনীর ধারা অব্যাহত রাখবো ইনশাআল্লাহ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সংক্ষিপ্ত ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মোস্তাক আহাম্মদ, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. অবিদ মিয়া, সীমান্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নূরুল হক শাহীন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দীন মনির।