চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ফৌজদারহাটস্থ ডিসি পার্কে চলছে জমজমাট ফুল উৎসব। আর এ উৎসবে অপরিসীম মুগ্ধতা ছড়িয়ে সবার নজর কেড়ে নিয়েছে টিউলিপ। সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্ক এখন প্রতিদিন দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখরিত থাকে। এ ফুল উৎসব চলবে মাসজুড়ে। পুরো মেলা যেন এখন ফুলের গালিচা হয়ে উঠেছে। লাখো ফুলের সমাহারে প্রাকৃতিক রূপে মুগ্ধ দর্শনার্থী ও অতিথি সবাই। অগণিত দর্শনার্থীর পদচারণে আনন্দে মুখর ডিসি পার্ক। ফুলের এই মেলায় যে কেউ এসে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে। ফুলপ্রেমী-দর্শনার্থী সবার মনেই অন্যরকম রোমাঞ্চ জাগায় এ ফুলের মেলা। এক অনিন্দ্যনীয় মুগ্ধতা মেলার দর্শণার্থীদের মোহাচ্ছন্ন করে তোলে। উৎসবে যারাই আসে তারা সবাই আনন্দে যেন মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। ফুল উৎসবের মাঝখানের বিশালাকার পুকুরে চলে কায়াকিং। পুকুরের দুপাশে রয়েছে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, কামিনি, বেলি এবং চেরিসহ দেশী-বিদেশী ১২৭ প্রজাতির ফুলের সমারোহ। হাঁটতে হাঁটতে ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছিলেন ফটিকছড়ি থেকে আসা আলী হাসান। তিনি বলেন, এর মধ্যে দুবার এলাম। অন্যরকম সুন্দর লাগছে। তিনি বলেন, প্রথম ফুল উৎসবেও আমি এসেছিলাম, তবে তখন এত আকর্ষণীয় ছিল না। অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে এবার, ভালো লাগল। অন্যদিকে এই ফুলের রাজ্যে এখন ফুটতে শুরু করেছে টিউলিপ ফুল। ফুলের সমারোহের মধ্যে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এখন টিউলিপ। শীতপ্রধান দেশে টিউলিপ ফুল হরহামেশাই দেখা যায়। কিন্তু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে এটি তেমন একটা দেখা যায় না। টিউলিপ ফুল চাষের ক্ষেত্রে দিনের বেলা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহনশীল ধরা হয়। এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা হলে প্রাপ্তবয়সের আগে মানসম্মত ফুল নাও ফুটতে পারে। স্বাভাবিকভাবে রোপণের ১৮ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কলি আসতে শুরু করে এবং ২৫ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত টিউলিপ ফুল স্থায়ী হয়। অনেক সময় আবহাওয়ার কারণে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে।কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানা যায়, গাজীপুরের এক দক্ষ ফুলচাষি দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে এসে তাকে দিয়ে ডিসি পার্কে গড়ে তোলা হয়েছে টিউলিপের বাগান। এখন ছাউনির ভেতরে টিউলিপ ফুটতে শুরু করেছে। সেখানে শোভা পাচ্ছে লাল, হলুদ, গোলাপি ও সাদা রঙের টিউলিপ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, দর্শনার্থীদের বিশেষ আকর্ষণের কারণে ফুল উৎসবের দুই মাস আগে নেদারল্যান্ডস থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টিউলিপ ফুলের বীজ আনা হয়। যা জেলা প্রশাসনের নিজেদের ব্যবস্থাপনায় রোপণ করা হয়। এখন টিউলিপের সমাহার সবার জন্য আনন্দের উৎস হয়ে উঠেছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, গত বছর প্রথমবারের মতো ফুল উৎসবের সময় টিউলিপ ফুলের বীজ রোপণ করা হয়েছিল, সফলও হয়েছিল। মোটামুটি ফুল ধরেছিল। এবার ব্যাপকহারে বীজ রোপণ করা হয়েছে। ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এ ফুল নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই।