রংপুর অঞ্চলে শীতের তীব্রতা যতই বাড়ছে ততই আগুনে পোড়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে ৩৫ জন শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপ নিতে গিয়ে দ্বগ্ধ হয়েছেন। রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে আগুনে পোড়া এসব রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিট গিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে রমেক হাসপাতালে দগ্ধ রোগী রয়েছেন ৩৪ জন। এর মধ্যে ১১ জন বার্ন ইউনিটে, ৬ নং ওয়ার্ডে ১৬ জন, ১৬ নং ওয়ার্ডে ১২ জন এবং ৩৭ নং ওয়ার্ডে ৯ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে শীতের হাত থেকে বাঁচতে খড়-কুটা জ্বালিয়ে উত্তাপ নেয়ার সময় রংপুর ও আশপাশ এলাকায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের কয়েকজনের শরীর ৪০ শাতাংশ পুড়ে গেছে। বার্ন ইউনিটে কথা হয়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলা থেকে আসা ববিতা রানীর স্বজনের সাথে। মঙ্গলবার বাড়িতে খড়কুটা জ্বালিয়ে উত্তাপ নিয়ে গিয়ে দগ্ধ হন তিনি। তাকে কুড়িগ্রাম থেকে রমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কুড়িগ্রাম থেকে এসেছে আয়শা আক্তার নামে ৪ বছরের শিশু। তার মা শাহানা বেগম জানালেন চুলার আগুনে উত্তাপ নিতে গিয়ে তার মেয়ে দগ্ধ হয়েছেন মঙ্গলবার। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ি তাকে রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকালে রংপুর নগরীর আলেয়া বেগম আগুন তাপাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তার দেহের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার রাতে এসেছেন লালমনিরহাটের ভেলাগুড়ি এলাকার পলি বানী (৩৫)। তার শাশুড়ি আরতি রানী বলেন, শীতের হাত থেকে বাঁচতে উত্তাপ নিতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তার দেহের অধিকাংশ স্থান পুড়ে গেছে। বার্ন ইউনিট বাদে অন্যান্য ওয়ার্ডে যেসব আগুনে পোড়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের রেজিস্টার্ড ডা. শাহ মোহাম্মদ আল মুকিত জানান, প্রতিবছরই আগুন তাপাতে গিয়ে দগ্ধ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এ জন্য জনগণের সচেনতা প্রয়োজন। আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিচ্ছি শীতের হাত থেকে বাঁচতে যাতে কেউ খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন না তাপায়।