ঢাকারবিবার , ১৫ জুন ২০২৫
  1. অভিযোগ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আটক
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আবহাওয়া
  7. আলোচনা সভা
  8. ইতিহাস
  9. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  10. কক্সবাজার
  11. কচুয়া
  12. কবিতা
  13. কিশোরগঞ্জ
  14. কুড়িগ্রাম
  15. কুমিল্লা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পটিয়ায় সংগীত সাধকদের স্মরণে হৃদয়ছোঁয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

প্রতিবেদক
majedur
জুন ১৫, ২০২৫ ১২:৪৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

যীশু সেন :

সংস্কৃতি একটি জাতির আত্মার প্রতিচ্ছবি, আর সংগীত সেই আত্মার প্রতিমূর্তি। আগামী প্রজন্মকে সংগীতের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে এবং প্রয়াত সংগীত সাধকদের স্মৃতিতে অম্লান রাখতে পটিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো এক হৃদয়স্পর্শী স্মরণানুষ্ঠান।
গত ১২ জুন বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩.৩০ ঘটিকায় পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে পটিয়া সংগীত শিক্ষক ও শিল্পী কল্যাণ পরিষদ এবং সুর প্রকাশ সাংস্কৃতিক একাডেমীর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখা পাঁচ বিশিষ্ট সংগীত ব্যক্তিত্ব ওস্তাদ মিহির লালা, পণ্ডিত নির্মলেন্দু চৌধুরী, সনজিত আচার্য, শুভ্রা চৌধুরী ও প্রণব ভট্টাচার্যকে।

অনুষ্ঠানের সূচনাতেই প্রয়াত সংগীত সাধকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর মাধ্যমে শুরু হয় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিবেদন। এরপর একে একে অতিথিবৃন্দ স্মৃতিচারণা করেন তাঁদের সংগীতচর্চা, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অবদান তুলে ধরেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংগীত পরিচালক, গীতিকার ও সুরকার শিল্পী প্রকাশ চন্দ্র শীল। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন খলিলুর রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সংগীতানুরাগী তরুণ ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের গীতিকার শিল্পী উত্তম কুমার আচার্য এবং ব্যাংকার উজ্জ্বল শুক্ল দাশ। পটিয়া সংগীত শিক্ষক ও শিল্পী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস ফারুকী ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক রূপক শীল এর দ্বৈত সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পটিয়া সংগীত শিক্ষক ও শিল্পী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি বিশিষ্ট সংগীত শিক্ষক দীপক শীল, প্রয়াতদের পক্ষে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য স্মারক গ্রহণ করেন-মিলন আচার্য, হিমাদ্রি শেখর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য, জুয়েল চৌধুরী প্রমূখ।
আলোচকরা বলেন, সংস্কৃতির ধারক প্রজন্ম, স্মৃতির আলোকবর্তিকা সংগীত।
“যে জাতি তার সংস্কৃতি ও শিল্পীকে স্মরণ করে, সে জাতির অস্তিত্ব আজীবন বেঁচে থাকে”। তাঁরা সংগীত সাধকদের শৈল্পিক দক্ষতা, তাঁদের সংগীত শিক্ষা বিস্তারে নিরলস প্রচেষ্টা এবং সংস্কৃতি রক্ষায় অসাধারণ ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। বক্তারা নতুন প্রজন্মের মধ্যে সংগীত ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে এই ধরনের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

স্মরণানুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, যা ছিল অত্যন্ত হৃদয়ছোঁয়া। উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী রিষু তালুকদার, আশীষ শীল ও স্নেহা মজুমদার। তবলায় সংগত করেন -রূপক ভট্টাচার্য,চিন্ময় দে ও অমর্ত্য চক্রবর্তী। তাঁদের কণ্ঠে ও বাজনায় রাগ সংগীতের ধারাবাহিকতা এবং শুদ্ধ সংগীতের প্রতি নিষ্ঠা দর্শকদের বিমোহিত করে।

একক পরিবেশন করেন মিলন আচার্য,শহীদ ফারুকী, জয়া বড়ুয়া, মৃন্ময় দে,দীপা দাশ এবং সুর প্রকাশ সাংস্কৃতিক একাডেমির শিক্ষার্থীবৃন্দের দলীয় ও একক পরিবেশনা ছিল ভাবনামূলক, সুসজ্জিত ও শ্রুতিমধুর, যা পুরো মিলনায়তনে সৃষ্টি করেছিল এক আবেগঘন পরিবেশ।

তবলার লহড়ায় অংশ নেন মৃন্ময় দে, ও স্নেহা মজুমদার। তবলার ছন্দময় ঝঙ্কার দর্শকদের সংগীতের গহীন জগতে নিয়ে যায়।সংগীত পরিচালনায় দীপক শীল ও নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন অলকা মজুমদার, যাঁর নির্দেশনায় সমগ্র অনুষ্ঠান ছিল শৈল্পিক ও নান্দনিক।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়, যা তাঁদের উৎসাহিত করে ভবিষ্যতে সংগীতচর্চায় আরো বেশি মনোনিবেশ করবে।

এই আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন প্রকাশ চন্দ্র শীল, অ্যাড. আশীষ চৌধুরী, মঞ্জুর আহমদ, অ্যাড. অরুণ মিত্র, অ্যাড. মিন্টু আচার্য, ওয়াশিংটন দে, রূপক শীল, মো. আকরাম, শর্মিলী চৌধুরী, বেবী পালিত, মৌমিতা বড়ুয়া, অনির্বাণ পালিত,দেবু চৌধুরী, পলাশ দে ও অপু দে।

এই স্মরণানুষ্ঠান প্রমাণ করে যে সংগীত শুধুমাত্র বিনোদন নয়, এটি একটি চেতনা সম্পন্ন সামাজিক আন্দোলনের অংশ। পূর্বসূরিদের অবদান স্মরণ ও পরবর্তী প্রজন্মকে সেই আদর্শে গড়ে তোলার এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Don`t copy text!