নিউজ ডেস্ক,, রিপোর্ট,,।
সারেগামাপার অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন – সাংস্কৃতিক বিকাশে সংগীত শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। সংগীত ও সাংস্কৃতিক চর্চা একটি জাতির শিকড়কে গভীরভাবে ধারণ করে রাখতে সাহায্য করে। বর্তমান প্রজন্মকে সংগীত ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। শুধুমাত্র একাডেমিক সাফল্য নয়, একজন মানুষের মানসিক ও নৈতিক বিকাশেও সংস্কৃতিচর্চা অপরিহার্য। সংগীত আমাদের চিন্তা, চেতনা ও আবেগকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। শিশুকাল থেকেই সংগীতচর্চা মননশীলতা, ধৈর্য ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। সংগীত কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়; এটি মনকে প্রশান্ত করে, বিষণ্ণতা দূর করে এবং জীবনে শৃঙ্খলা আনে। সংগীতের মাধ্যমে মানুষ পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়, গড়ে ওঠে সহমর্মিতার বন্ধন। এক কথায়, সংগীতহীন জীবন যেন প্রাণহীন এক দেহের মতো। তাই নতুন প্রজন্মের মাঝে সাংস্কৃতিক বোধ ও সংগীতপ্রেম জাগিয়ে তোলা আমাদের সবার দায়িত্ব। সংস্কৃতিই আমাদের পরিচয় ও অস্তিত্বের মূল ভিত্তি।
সংগীত ও সংস্কৃতির চর্চা জাতির অগ্রযাত্রার চাবিকাঠি।
বক্তারা আরো বলেন- সৃজনশীলতায় ও নৈতিকতা চর্চার জন্য সংগীত শিক্ষার বিকল্প নেই। সংস্কৃতির অগ্রযাত্রা ও তরুণ প্রজন্মের মানসিক বিকাশে এমন আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারেগামাপা সংগীত নিকেতন শুধু একটি সংগীত শিক্ষাকেন্দ্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অংশ হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মধ্যে দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও সৌন্দর্যচেতনার বীজ রোপণ করা হচ্ছে।
গত ৫ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ ঘটিকায় হাটহাজারী ত্রিবেণী কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত সারেগামাপা সংগীত নিকেতনের বার্ষিক পুরস্কার ও সনদ বিতরণ, আলোচনা সভা, গুণীজন সম্মাননা ও মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন এর সংগীত পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী প্রকাশ চন্দ্র শীল এর সভাপতিত্বে উদ্বোধক ছিলেন হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ডা. গোবিন্দ প্রসাদ মহাজন। প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য সমাজবিজ্ঞানী ও ঘাসফুলের চেয়ারম্যান ড. মনজুর উল-আমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন নলেজ স্কুল এণ্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও জাগৃতি এর সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান, দৈনিক ইনফো বাংলা পত্রিকার সিনিয়র সাব-এডিটর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব যীশু সেন, কথা ৭১ এর চেয়ারম্যান সজল কুমার নাথ। অনুষ্ঠান দ্বৈত সঞ্চালনায় ছিলেন প্রিয়াংকা সরকার ও প্রিয়ন্তী ঘোষ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সারেগামাপা সংগীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সংগীতশিল্পী সুমি চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি রাসেল দত্ত। উপস্থিত ছিলেন ঝুমকা তবলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম দাশ। অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিলেন আদিত্য দাশ, রাইটেন দাশ ও হৃদি ঘোষ প্রমূখ। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন সারেগামাপা সংগীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সংগীতশিল্পী সুমি চৌধুরী।
এ আয়োজনে একদিকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়, অন্যদিকে গুণীজনদের কৃতিত্বকে তুলে ধরা হয় শ্রদ্ধার সাথে, সম্মাননা স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করার মাধ্যমে। নানা বয়সী অতিথি, শিক্ষার্থী, অভিভাবক সংগীত অনুরাগীও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলায় রূপ নেয় অনুষ্ঠানস্থল। অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক ছাত্র- ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানটি ছিল সফল ও সুশৃঙ্খল। হাটাজারীর সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে প্রশংসিত হয়।