উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নে দুস্থ নারীদের উন্নয়নের জন্য ভালনারেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট বা ভিজিডি কর্মসূচির কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাল বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার দুপুরে তিলকপুর ইউনিয়নের রাইঝোর সেতু মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও উপকারভোগী সূত্রে জানা যায়, ভিজিডির অধীনে দুস্থ নারীদের জন্য ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুই বছর মেয়াদে তিলকপুর ইউনিয়নে ২৮১টি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এ কার্ডধারীদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নতুন তালিকা না হওয়ায় পুরোনো তালিকা অনুযায়ী ভিজিডির চাল বিতরণ হওয়ার কথা।
কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাসের চাল বিতরণ বন্ধ ছিল। প্রত্যেক কার্ডধারীকে ৫ মাসের মোট ১৫০ কেজি ভিজিডির চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ২০ মে থেকে বিতরণ করা শুরু হয়। সেই চাল পেতে গিয়ে উপকারভোগীদের গুনতে হবে ১ হাজার টাকা করে।
কারণ হিসেবে প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা পরিবহন ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেন। তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক থাকায় ওই ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ইউপি সদস্য সোহেল রানা।
আজ সোমবার দুপুরে তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন রাইঝোর ব্রিজ মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দুই শতাধিক মানুষ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। ভিজিডির চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ভুক্তভোগীরা তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও অন্যান্য ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী আঙ্গুরী আক্তার বলেন, ‘চাল দেওয়ার আগে খরচের কথা বলে গ্রাম পুলিশ আলামিন এক হাজার টাকা নিয়ে গেছে। প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল রানার নাম করে টাকা আদায় করেছে গ্রাম পুলিশ আলামিন। তখন মনে করেছিলাম, এবার ভিজিডি চাল বিতরণে হয়তো নতুন নিয়ম করেছে। সে জন্য টাকা নিচ্ছে। কিন্তু এখন লোকজনের কাছ থেকে শুনতেছি আগের নিয়মই নাকি আছে।
চাল নিতে কোনো টাকা দেওয়া লাগবে না। আমাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা অন্যায়ভাবে টাকা নিয়েছে। এটার একটা বিচার হওয়া উচিত।’
রাইঝোড় গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘মেম্বার (ইউপি সদস্য) জাহিদুল ইসলাম আমার কাছে থেকে চেয়ারম্যানের কথা বলে চাল দেওয়ার জন্য এক হাজার টাকা নিয়েছে।
প্রথমে যখন টাকা চাইল তখন দিতে চাইনি। তখন মেম্বার বলে, “একসঙ্গে ১৫০ কেজি চাল পাচ্ছিস। প্রায় ৮ হাজার টাকার চাল পাচ্ছিস আর ১ হাজার টাকা দিবি না?” খোঁজ নিয়ে দেখলাম, সবার কাছে এভাবে টাকা নিছে। তাই আমিও দিয়েছি।