সোহেল রানা যশোর :
সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। সোমবার যশোর শহরের একটি অভিজাত হোটেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণে আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যদি সেনাবাহিনী ভূমিকা না রাখতো, তাহলে অভ্যুত্থানে সফল হতো না। যখন সেনাবাহিনীর বন্দুকের নল আওয়ামী লীগে দিকে, ফ্যাসিস্ট পুলিশের দিকে তাক করেছিলো তখনই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। এখন সেই সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
যারা সেনাপ্রধানকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছেন তাদের উদ্দেশ্য করে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘একটি পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে উস্কানি দিয়ে আর একটি এক এগারো তৈরি করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। জনগণকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করা হচ্ছে। এই চক্রান্তের সঙ্গে দেশীয় ও বিদেশী চক্রান্তকারী জড়িত। তাদের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। সেনা প্রধানকে সরিয়ে আর একটি ফখরুদ্দিন, মইন উদ্দিন হবে না তার কিসের নিশ্চয়তা রয়েছে! এই সেনাবাহিনীকে শেখ হাসিনা বির্তকিত করেছে। তাই সেনাপ্রধানকে বলবো, সেনাবাহিনীর সংস্কারের প্রয়োজন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, এই সরকারের দায়িত্ব অনেক। এই সরকার যদি গণহত্যার বিচার সঠিকভাবে না করতে পারে; তাহলে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। এই সরকার যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করতে পারে, তাহলে দুই হাজার শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে। এই মুহূর্তে সব রাজনৈতিক দল একতাবদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে। আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তারপরও এই দল কোনভাবেই আর রাজনীতি করতে পারে না। কোনভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। সুতরাং আমাদের স্পষ্ট কথা, আমরা যারা রক্ত দিয়েছি, আন্দোলন করেছি, এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলন করেছি তাদের বক্তব্য হলো, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন কেন, আওয়ামী লীগ বাংলার মাটিতে আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এই ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যমত দরকার। ঐক্যমত যদি না থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগ ফিরে এসে আমাদের কাউকেই রেহাই দেবে না। আওয়ামী লীগকে সবাইরে ফাঁসির কাস্তে ঝুলাবে। তাই এই সরকারকে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। যারা গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছে তাদের ডাকতে হবে। তিনি তা না করে নিষিদ্ধের ব্যাপারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উপর দায় চাপাচ্ছেন। তিনি কেন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারছে না, তিনি কি আন্তজার্তিক চাপের কারণেই নিষিদ্ধ করতে পারছে না?
বিপ¬ব আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমালোচনা করে রাশেদ বলেন, যে ছাত্রনেতারা আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখলো; তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির অভিযোগ আসছে। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের না; রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ। আমরা কেউ আওয়ামী লীগ হবো না। আমরা যদি আওয়ামী লীগের মতো চাঁদাবাজি অত্যাচার দুনীর্তি ঘুষবাণিজ্যে লিপ্ত হই বাংলাদেশের মানুষ আমাদেরকেও প্রত্যাখ্যান করবে। তাই আসুন চুড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ হই।
অনুষ্ঠানে যশোর জেলা শাখার সভাপতি এ বি এম আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, গণঅধিকার পরিষদের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু প্রমুখ।