আওয়ামী লীগের পতনের ৬ মাস পর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বাড়ি ভাঙচুর প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভাঙচুরের সংস্কৃতি তৈরি করলে আগামী দিনে নিজেদের বাড়িঘরও ভাঙচুর হবে।
আজ রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোটের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘৬-৮ আগস্ট যদি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর করে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করত, কেউ কিছু বলত না। ছয় মাস পরে আমাদের এই চেতনাবোধ এল কেন? এটা বুঝতে হবে। আমরা যদি ব্যাক ট্র্যাডিশন তৈরি করি, তাহলে আগামী দিনে আপনার-আমার বাড়ি ভাঙচুর হবে।’
ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা উসকানিমূলক কথা বলেছেন, তিনি পাগল হয়ে গেছেন, মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে গেছে। তাঁর কথায় কান কেন দেব এবং ফাঁদে পা দেব কেন।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার কী চায়, তা তিনি বোঝেন না এবং সরকারের চাওয়া সরকার নিজেও হয়তো বোঝে না। রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের দক্ষতা নেই, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় নেই। প্রধান উপদেষ্টার কথার সঙ্গে অন্য উপদেষ্টাদের কথার মিল থাকে না।’
বর্তমান সরকারের সংস্কার নিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র নিজেও চিন্তিত বলে জানান। তিনি বলেন, কারণ এক-এগারোতে সংস্কারের নামে কুসংস্কার তৈরি করা হয়েছিল। এই সরকারের ভালো কিছু করার চিন্তা থাকলে তারা বিএনপির ৩১ দফার ওপর কাজ করতে পারে। এত কমিশন করার দরকার নেই।
কর্মশালায় বিএনপির ৩১ দফা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন। তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারে কোনো অগণতান্ত্রিক বা অবৈধ সরকার হাত দিতে পারে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই সেটা পারে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ প্রমুখ।