কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নিজাম ক্বারী (৬২)কে বিস্ফোরক মামলায় আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর ০০.৩০ ঘটিকার সময় ব্রাহ্মবাড়ীয়া নন্দনপুর বিশ্বারোড এলাকা থেকে ব্রাহ্মবাড়ীয়া সদর থানা পুলিশের সহায়তায় কুলিয়ারচর থানা পুলিশ তাকে আটক করে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদলতে প্রেরণ করেন তাকে।জ
আটককৃত মো. নিজাম ক্বারী উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের নাজিরদিঘী গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফ ও মৃত রনু বানু দম্পত্তির ছেলে। তিনি স্থানীয় উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে মো. নিজাম ক্বারীর বিরুদ্ধে। তিনি বিস্ফোরক মামলার তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামী।
গত ৪ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের কুলিয়ারচর উপজেলাস্থ বাজরা বাসস্ট্যান্ডে শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলনের সময় ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো একসাথে দেশীয় অস্ত্রাদীসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ম্যাসাকার চালানোর অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট উপজেলার রামদী ইউনিয়নের আগরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো. মজলু মিয়ার ছেলে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. নয়ন মিয়া বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ১৫। এ মামলার তদন্তে তিনি সন্ধিগ্ধ আসামী।
এ মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ নূরে আলম (৬১) সহ এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আরো ৭ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ৮ জন নেতা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে।
জানা যায়, এর আগে ৫ অক্টোবর শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর অর্থাৎ ৬ অক্টোবর রোববার গভীর রাতে তদন্তে সন্ধিগ্ধ আসামী উপজেলার ডুমরাকান্দা বাজার থেকে কান্দুলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মোস্তফা’র ছেলে সালুয়া ইউনিয়ন ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো, হাবিবুর রহমান সুমন (৪২) কে, উপজেলার কাপাশাটিয়া মসজিদের সামনে থেকে কাপাশাটিয়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে উসমানপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব মো. হুমায়ুন কবির (৪০) কে, পৌর এলাকার খরকমাড়া তিশা বাসষ্ট্যান্ডের সামনে থেকে পৌর এলাকা চারারবন গ্রামের মৃত আ. জলিল মিয়ার ছেলে ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মন্নান মনু (৫৬)কে, কুলিয়ারচর মাছ বাজার থেকে পৌর এলাকার পূর্ব গাইলকাটা গ্রামের মৃত মো. সিরাজ মিয়া ছেলে উপজেলা মৎসজীবী লীগের সদস্য মো. সুলেমান মিয়া (৪৪) কে ও পৌর এলাকার পালটিয়া মাসকান্দি মোড় হইতে পালটিয়া মধ্যপাড়া মহল্লার মৃত সৈয়দ আতাউর রহমানের ছেলে ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাইন উদ্দিন (৫৮) কে গ্রেফতার করে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কিশোরগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পৌর এলাকার পূর্ব গাইলকাটা মহল্লা থেকে পৌর এলাকার পালটিয়া মহল্লার সৈয়দ মুর্শিদ মিয়ার ছেলে সৈয়দ নুরে আলম (৬১) ও বাজরা তারাকান্দি গ্রাম থেকে তারাকান্দি গ্রামের মৃত মজনু মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মো. মনির মিয়া (৩১)কে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, গত ৩০ জুলাই নয়ন মিয়া নামের এক ছাত্র বাদী হয়ে কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান (৪০)’কে প্রধান আসামি করে ৮৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০০ জনের নামে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে এ পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করে।