দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আদিবাসিদের ঐতিহ্যবাহি মিলন মেলায় যোগ দিতে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রাজশাহী ও নওগাঁও জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র- নৃ-গোষ্ঠীর লোকেরা আসেন ।
স্থানীয় ভাবে এরা আদিবাসী বা সাওতাল বলে পরিচিত। সকল থেকেই নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ আসতে শুরু করে মেলায়।
শারদীয় দূর্গা পুজার একদিন পরে উপজেলার গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলন মেলা হওয়ার কথা থাকলেও সোমবার হাটের দিন থাকায় মঙ্গলবার উৎসবে মেতে উঠে সকল বয়সের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মেলা। মেলায় বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে তরুন-তরুনীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসব মুখর পরিবেশে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে এই মিলন মেলা। এটি অনেকের কাছে বাসিয়া হাটি নামে পরিচিত।
আজ মঙ্গলবার নিজপাড়া ও মোহনপুর ইউনিয়নের আয়োজনে এবং গোলাপগঞ্জ দূর্গাপুজা উদযাপন কমিটির সার্বিক তত্তাবধানে মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি মোঃ মনজুরুল মঞ্জু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপি সভাপতি মোঃ আমিরুল বাহার, মোহনপুর ইউপি য়োরম্যান জনাব মোঃ শাহীনুর ইসলাম শাহীন, নিজপাড়া ইউপি য়োরম্যান মোঃ আনিসুর রহমান আনিস, বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শীতল মার্ডি।
এই মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে একটি গুজব পেপার পত্রিকায় দেখা যায়। এখানে নাকি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। এখানে কোনো পাত্র বা পাত্রী পছন্দ হলে ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্ত বাস্তবে এর সত্যতা খুজে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শীতল মার্ডি বলেন, পুর্ব পুরুষেরা এই মেলা শুরু করে। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাচ্ছি। তবে কবে থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে সেটি সঠিক ভাবে বলা যাবে না। আনুমানিক ভাবে কয়েক শত বছর পুর্ব থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এটি বাপ-দাদার কাছে শুনেছি। তবে বিয়ের বিষয়টি আমি এই মেলায় হতে দেখিনি। কেউ মেলায় কাউকে পছন্দ করে পরে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করতেই পারে। এর জন্য আদিবাসী বউ মেলা নামে পরিচিত পেয়েছে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সব বয়সী নারী-পুরুষেরা নানা রুপে ভিন্ন ভিন্ন সাজে মেলায় এসেছে। বাহারি সব কাঁচের চুড়ি, রঙিন ফিতা, লিপস্টিক, কানের দুল, ঝিনুকের ও মাটির তৈরি তৈজসপত্র খেলনা, গৃহস্তালিকাজে ব্যবহৃত দা কুড়াল,হাড়ি পাতিল,জিলাপি, মিষ্টিসহ বিভিন্ন খাবারের দোকানে পসরা সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা।