রতন মালাকার, সাপাহার, (নওগাঁ)
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আর মাত্র ২দিন বাঁকি । শেষ মুহূর্তে সাপাহারে মণ্ডপে মণ্ডপে রং-তুলির মধ্য দিয়ে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ চলছে । প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমা তৈরির কারিগরসহ সংশ্লিষ্টরা। এতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
রবিবার (৬অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদরের পালপাড়া মণ্ডপ, সাহাপাড়া ও বারোয়াড়ী পূজা মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে জোরেসোরে। রং তুলির আঁচরে প্রতিমা সাজানোর কাজ শেষ করেছেন করছেন অনেক কারিগররা। এছাড়া বাঁশ, বেত, তালপাতা, খড়, কাগজসহ বিভিন্ন আলোকসজ্জার দিয়ে মণ্ডপ সাজানোর কাজ চলছে।
সদরের পালপাড়া পূজা মণ্ডপে প্রতিমার রঙের কাজ করছেন কারিগর গোপাল পাল। তিনি জানান, দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে প্রায় ১২ দিন সময় লেগেছে। এখন রং কাজ শেষ করেছি, আশা করছি, খুব শীঘ্রই প্রতিমা কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উপজেলার নিশ্চিতপুর বাজার পূজা মণ্ডপের কারিগর রতন বলেন, প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ শেষ করে এখন রঙের কাজও প্রায় শেষ করেছি। এখন প্রতিমা সজ্জাকরণ চলছে ,কাজ প্রায় শেষ দিকে। এ ছাড়া সাজসজ্জার জন্য শাড়িসহ আনুসাঙ্গিক কাজ বাকি রয়েছে। কাজ সম্পন্ন করতে আর দুই এক দিন সময় লাগবে। এ ছাড়াও উপজেলার তিলনা পূজা মন্প, নিশ্চিতপুর,ভিওইল সহ প্রায় ৭ টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ করেছি।
তিনি বলেন, একটা প্রতিমা তৈরি করতে প্রায় ২৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে । প্রতিমা তৈরি করতে বাঁশ, কাঠ, খড়, তারকাটা, সুতা, পাট, বিভিন্ন ধরনের মাটি ও রং ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
সাপাহার সদর পালপাড়া দূর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল পাল বলেন, সাপাহারে ১৮ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে । সেই লক্ষ্যে জোরেসোরে কাজ চলছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এখন নির্দিষ্ট সময়ের অপেক্ষায় আমরা আছি। আগামী ৯অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আমাদের পূজার কার্যক্রম শুরু হবে। ১৩অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে ৫ দিন ব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হবে।
পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এছাড়াও শারদীয় দুর্গা পূজা উৎসব উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সাথে মতবিনিময় সভা হয়েছে। তারা সবাই আমাদেরকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, উপজেলার ১৮ টি পূজা মণ্ডপে সরকারি ভাবে ৫০০ কেজি চাউল বিতরণ করা হয়েছে এবং ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। সেই সাথে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মন্ডপে মন্ডপে গ্রাম পুলিশ, আনসার সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ , সেনাবাহিনীসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। আশা করছি কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।