মোঃ জাবেদ আহমেদ জীবন নবীনগর উপজেলা প্রতিনিধি
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা কে ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। পিছিয়ে নেই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলা ও ২ অক্টোবর বুধবার সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় নবীনগর উপজেলার পৌরসভার ভোলাচং এর প্রতিমা কারিগরদের সাথে, দেখা যায়
কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই। কেউ বা মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরী করছেন কেউ আবার ব্যস্ত রঙের তুলিতে প্রতিমা সাজাতে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে লোকজন আসছেন প্রতিমা নিতে মন্দিরগুলো সাজানো হচ্ছে রঙ তুলিতে এ যেন উৎসবে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ।
কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন ছোট বড় প্রতিমা তৈরী তে বাঁশ-কাঠ আর কাদামাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন কেউ ক্রয় করছেন কেউ তাদের মনের মতন করে অর্ডার দিচ্ছেন।
প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা
একনিষ্ঠ চিত্তে নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মাটি লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেউ কাদা তৈরি করছেন, কেউ আবার কাদা দিয়ে হাত-পা বানাচ্ছেন। বেশিরভাগ প্রতিমার কাদামাটি লাগানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।কারিগররা জানান
দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও সকল ধরনের প্রতিমা আমরা তৈরি করি। তবে দ্রব্যমূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে রং, তুলি ও সাজসজ্জার দাম বেশি হওয়ায় এবং প্রতিমা তৈরির মজুরি কম পাওয়ায় কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে শিল্পীদের। তবে চলতি বছর প্রতিমার চাহিদা গত বছরের তুলনায় একটু কম।
মৃৎশিল্পীরা আরো বলেন, প্রতি বছর দুর্গা প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম ও চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি প্রতিমার দাম।
প্রতিমা তৈরির কারিগররা বলেন, অতীতে যেভাবে মানুষ মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতেন, সে চাহিদা না থাকায় আমাদের প্রায় সারাবছরই অলস সময় কাটাতে হয়। তবে দুর্গাপূজা চলাকালে প্রতিমা তৈরি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে সারাবছর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আবার চলতি বছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছে না। এতে আমাদের যে টাকা আয় হওয়ার কথা, তা আর হচ্ছে না।
কারিগররা আরো বলেন একটা প্রতিমা তৈরী করতে খরচ হয়ে যায় কমপক্ষে পচিশ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার উপরে বিক্রি হয় পয়ত্রিশ হাজারে যা খরচ এখন পরে তাতে কারিগরদের খরচ দিয়ে তেমন আয় হয় না, বাপদাদার পেশা তাই ছাড়তে ও পারি না এছাড়াও নিজস্ব অর্থ থাকলে আয় করা যেতো সমিতি থেকে টাকা এনে তার লাভ শ্রমিক মাটি কাঠ রঙ দিয়ে তেমন একটা আয় হয় না আমাদের যদি সরকার থেকে এই সময় টায় আমাদের মতন কারিগরদের সহযোগিতা করা হতো অর্থ দিয়ে তাহলে আমরা কিছুটা লাভের মুখ দেখতাম পূজো টা আনন্দে বউ পোলাপান নিয়ে কাটাতে পারতাম।
আসছে
আগামী ৯ অক্টোবর বুধবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজা এবং ১৩ অক্টোবর রবিবার বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গাপূজা। এর আগে আগামী ২ অক্টোবর বুধবার মহালয়ার মধ্যদিয়ে দেবীপক্ষের শুরু হবে পূজা।
নবীনগর উপজেলায় পূজা উদযাপন পরিষদ এক সভায় জানান এবার
নবীনগর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়নে মোট ১১৩ টি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সব গুলো মন্দিরে দুর্গোৎসবের যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ চলছে। দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, উপজেলার ১১৩ টি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, প্রতিটি পূজামণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। সব পূজামণ্ডপে পুলিশ ও আনসার নিয়োগের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহল থাকবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পূজামণ্ডপ বিশেষ নজরদারিতে রাখা হবে।