মনিরুজ্জামান লিমন
বকশীগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভায় চাকুরি দেওয়ার নামে ও বিভিন্ন কায়দায় ঘুষ নেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে পৌর সচিব মো. নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে।
ওই সচিবের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে ভুক্তভোগীদেও মাঝে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ পৌরসভায় বাজার পরিদর্শক পদে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে এবং প্রলোভন দেখিয়ে নাজমুল শাকিল জিহাদ নামে এক যুবকের কাছ থেকে তিন ধাপে ১৮ লাখ টাকা ঘুষ নেন পৌর সচিব মো. নুরুল আমিন।
একই পৌরসভায় মাস্টার রোলে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে আবদুর রহিম নামে আরেক ব্যক্তির কাছে ৪ লাখ টাকা ঘুষ নেন পৌর সচিব মো. নুরুল আমিন। শুধু তাই নয় পৌর মেয়র ফকরুজ্জামান মতিন দায়িত্বে থাকাকালীন তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে কয়েকটি পদে নিয়োগের অনুমোদন এনে দেওয়ার কথা বলে মেয়র ফকরুজ্জামান মতিনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা ঘুষ নেন নুরুল আমিন। এছাড়াও পৌর সচিব মো. নুরুল আমিন সচিবালয় থেকে এডিপি প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে আনার কথা বলে আরও ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন তৎকালীন মেয়র ফকরুজ্জামান মতিনের নিকট।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বকশীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ফকরুজ্জামান মতিন ও ভুক্তভোগী আরও দুই ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলন করে পৌর সচিবের ঘুষ বাণিজ্যের কথা ফাঁস করে দেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনের পরই তোলপাড় শুরু হয় পৌর সচিবের ক্ষমতা ও তার ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে। অনেকেই প্রশ্ন করেন পৌর সচিবের ক্ষমতার উৎস কি? ৪১ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েও তিনি কিভাবে বহাল তবিয়তে থাকেন। তার সেল্টারদাতা কে? এসব নিয়েও আলোচনা চলছে পুরো বকশীগঞ্জে।
পৌর সচিবের ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে একজন যুবদল নেতা ফেসবুকের একটি পোষ্টের কমেন্টে লিখেন “ এর ব্যবসায় একটাই নিয়োগ বাণিজ্য আ¤øীগের দোষর”।
ছাত্রদলের এক নেতা ফেসবুকে একটি পোষ্টের কমেন্টে পৌর সচিব মো. নুরুল আমিনকে ইঙ্গিত করে লিখেন “ ভাই আপনার কথায় একমত কিন্তু সচিব সাহেব কিন্তু দুধে ধোয়া ধুয়া তুলসি পাতা না,,, তার অপকর্মের লিস্ট পাবেন যদি সঠিক অনুসন্ধান করেন। ছোট্ট করে একটা বলি, গর্ভবতী ভাতা বিতরণে শুধু মেয়র সাহেবের অধিকার থাকলেও সচিব সাহেব কিন্তু গর্ভবতী ভাতা করে দিয়ার কথা বলে চইতালি খাইছে অনেকের কাছে”। শুধু এভাবেই সমালোচনায় নয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব অনেকেই।
তিনি গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বকশীগঞ্জ পৌরসভায় সচিব পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার দাপটে অতিষ্ঠ পৌরসভার কর্মচারীরাও। এই সচিবের অসহযোগিতা ও ক্ষমতার কাছে হেরে গিয়ে বদলি হয়ে চলে গেছেন একাধিক সহকারী প্রকৌশলী।
তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে।
সর্বশেষ পৌর সচিবের ঘুষ বাণিজ্যের বিচার চেয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ৪১ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন সাবেক পৌর মেয়র ফকরুজ্জামান মতিন।
তদন্ত কমিটি গঠন করে পৌর সচিবের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া সহ তাকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।