মোঃ আলী সোহেল, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সাথে সেনাবাহিনীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা।
এসময় বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাকীন মাশরুর খান, কুলিয়ারচর সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর সাজ্জাদুর রহমান ও কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান।
সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মেজর সাজ্জাদুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের প্রধান বা অন্যান্য শিক্ষকগণের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের পদত্যাগ ও অপসারণের দাবিতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। কোথাও কোথাও শিক্ষকগণ ব্যক্তিগতভাবে হেনস্থার শিকার হয়েছেন এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এরুপ অবস্থা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেশের সংস্কার কার্যক্রমকে ব্যহত করছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তা নিষ্পত্তিকরণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি নীতিমালা রয়েছে যা কোন অবস্থাতেই বগিরাগত শিক্ষার্থী বা বহিরাগত কোন ব্যক্তির প্ররোচনায় ভঙ্গ করা যাবে না। এ পরিস্থিতিতে সরকারী নির্দেশনার আলোকে অদ্য ১ সেপ্টেম্বর হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান শিক্ষার্থী ও নির্দিষ্ট অভিভাবক ব্যতিত সকল বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। সকল ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাসে যোগদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। যে সকল ব্যক্তিবর্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।বাংলাদেশ গঠনে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সাল হতে পরবর্তী সময়ে লাইসেন্সকৃত সকল অস্ত্র এবং লাইসেন্সবিহীন অবৈধ অস্ত্র জরুরী ভিত্তিতে আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কুলিয়ারচর সেনাক্যাম্পে জমা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান কর হলো। পরবর্তীতে এ সকল অবৈধ অস্ত্র যদি কারো জিম্মায় থাকে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। কোন অবস্থাতেই দুর্নীতি অথবা চাঁদাবাজিকে প্রশ্রয় দিবেন না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দুর্নীতি ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে।
এসময় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নূরুল মিল্লাত, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুলিয়ারচর উপজেলা শাখার আমির মাওলানা রফিকুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শাহাদৎ হোসেন শাহ্ আলম ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মো. আজহার উদ্দিন লিটন প্রমূখ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মো. মোখলেসুর রহমান, শাহ্ মো. ফজলুল হক, মো. জসীম উদ্দিন, সুধাংশু চন্দ্র সূত্রধর, আনিসুজ্জামান, শেখ মুজিবুর রহমান, মো. মজিবুর রহমান, আব্দুল কাদির, মো. মতিয়ার রহমান, মো. রিয়াজুল করিম, এম এ কাশেম, সৈয়দা নাছিমা আক্তার ও মো. ফাইজ উল্লাহ প্রমূখ।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুলিয়ারচর উপজেলা প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল হাসিব, ফয়সাল আহমেদ রাজিব, ফয়সাল আহমেদ তুহিন, ফাহিম আহমেদ, মাজেদুল ইসলাম সিফাত, আহমেদ সিফাত ও তন্ময় নবাব।