মোঃ আলী সোহেল, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান (৪০)কে প্রধান আসামি করে ২৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০ জনের নামে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা করেছে কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্র।
গত ৩০ আগস্ট শুক্রবার উপজেলার রামদী ইউনিয়নের আগরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো. মজলু মিয়ার ছেলে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. নয়ন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ১৫।
মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন, রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলাল উদ্দিন (৫০), রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন শিশু (৫৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম (৫৫), শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব (৪৫), ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্বাস উদ্দিন (৫৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাজু মিয়া (৫০), আওয়ামী লীগ নেতা ফাইজুল্লাহ মিয়া (৫৬), ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন লিটন (৫৫), সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন (৪০), রামদী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আ. হান্নান (৪৫), ছাত্রলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম বাবু (৩০), গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিরুজ্জামান নাজু (৪৮), উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলী ইসলাম (৩৫), যুবলীগ নেতা শরীফ হোসেন (৩৮), হাবিবুর রহমান রতন (৪৪), জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলূম কুলিয়ারচর মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা জহির মিয়া (৪৭) ও যুবলীগ নেতা ফিরুজ খানসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন শুরু হইলে সমগ্র দেশের ন্যায় গত ৪ আগস্ট সকাল ১১ টার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের কুলিয়ারচর উপজেলাস্থ বাজরা বাসষ্ট্যান্ডে শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলন করিতে থাকে ছাত্র-ছাত্রীরা। এসময় ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো একসাথে দেশীয় অস্ত্রাদীসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ম্যাসকার চালায়।এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান ও রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাল উদ্দিনের হুকুমে সকল আসমীগণ নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা করিয়া দোকানপাট ভাংচুর, ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট করিতে থাকে। তখন উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিরোধ করিতে চাহিলে
হামলাকারীরা ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করে। এসময় ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের যৌক্তিক আন্দোলনের জন্য একত্রিত হইয়া স্লোগান ধরিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক আন্দালনকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পরপর ৪টি ককটেল নিক্ষেপ করে বাজারের দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়ে এবং ককটেলের ধোয়ায় অসুস্থ হইয়া পড়িলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয় তারা।
এব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান ও রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য আসামিদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান মামলা রুজু হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্যাপশান-
ছবি- কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান।