দীর্ঘ ৪ বছর পর নেতাকর্মীদের সঙ্গে করে
নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা জেলার সাবেক সদস্য সচিব মো. সজীব রায়হান।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রায় চার শতাধিক প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের লম্বা বহর নিয়ে রাজধানীর বাসা থেকে গাবতলী হয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক দিয়ে সজীব রায়হান ঢাকা জেলার সাভার পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কোটবাড়ি গ্রামের বাড়িতে যান।
মো. সজীব রায়হান জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় জর্জরিত থাকার কারণে দীর্ঘ ৪ বছর তিনি বাড়িতে ফিরতে পারেননি। বিগত বছরগুলোতে তার মা গুরুতর অসুস্থ হওয়া সত্বেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও পুলিশ-প্রশাসনের বাধায় দেখতে আসতে পারেননি।
এ সময় সজীব রায়হান নিজ গ্রামে ফেরার খবরে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তাকে দেখতে ছুটে আসেন এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। নেতাকর্মীরা তাকে স্লোগানে স্লোগানে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।
সজীব রায়হান জানান, বহুবার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলেও যেতে পারেননি। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সরকরের পদত্যাগের দাবিতে ২০২২ সাল থেকে একদফা দাবিতে বিএনপি আন্দোলন শুরু করলে তার গ্রামের বাড়ি ফেরা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ফলে তিনি ঢাকায় থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পতন ঘটলে তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে বাড়িতে ফিরেন বলে জানান। এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন তিনি।
মো. সজীব রায়হান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা জেলার বিগত কমিটির সাবেক সদস্য সচিব।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় লেখক মুস্তাকের মৃত্যু ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশ করে ছাত্রদল। সমাবেশের এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় ছাত্রদল নেতা সজীব রায়হান পুলিশের ওপর লম্বা বাঁশ নিয়ে আক্রমণ করে। এই ঘটনা মুহূর্তে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে আসছিল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ ২০২২ সালের ৪ নভেম্বর সাভার মডেল থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে একাধিক মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন তিনি।
এ সময় বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনসহ বিরোধী দলের প্রায় লক্ষাধিক নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় নেতা রয়েছেন শতাধিক। এখন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অনেকেই বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন বলে জানা গেছে।