মুন্সীগঞ্জ মুক্তারপুর সেতুর প্রবেশ মুখে সামান্য বৃষ্টিতে গর্ত-জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এসব গর্তে প্রায় যাত্রীবাহী অটোরিকশা উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার যাতায়াতকারী লক্ষাধিক মানুষ।
গত দু’বছর ধরে এ সেতুর ঢাল, মুক্তারপুর স্ট্যান্ডের এই সড়কটিতে বৃষ্টি ছাড়াও পানি জমে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সেতু কর্তৃপক্ষ।
সরজমিন দেখা যায়, মুক্তারপুর সেতুর প্রবেশ মুখের গোল চত্বর সড়কটি পানিতে ডুবে আছে। সড়কের মধ্যদিয়ে বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মিশুক, মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করছে। পানির নিচের গর্তে পড়ে যানবাহন উল্টে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। গর্ত এড়িয়ে চলতে গিয়ে সেতু এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা যানবাহনকে গর্ত চিহ্নিত করে নিরাপদ স্থান দিয়ে যেতে সহযোগিতা করছে।
এ সময় মুক্তারপুর ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুক্তারপুর সেতু পারপার হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে যাতায়াত করে। অথচ সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ এ জায়গাটিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
জলাবদ্ধতার কারণে সেতুর প্রবেশ মুখে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এতে যানবাহন চলতে গিয়ে প্রায় উল্টে যাচ্ছে। এ কারণে মুন্সীগঞ্জ সদরের মুক্তারপুরের এ পথ দিয়ে হেঁটে তো দূরে থাক এখন গাড়িতে চলাচলও মুশকিল হয়ে পড়েছে। ফলে চালক, যাত্রী, পথচারী সবাইকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয় আল আমিন হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, জমে থাকা পানির নিচের গর্ত বোঝার উপায় নেই। গত কয়েকদিন ওই গর্তে পড়ে ৪-৫টি যাত্রীবাহী অটো উল্টে গেছে। গত শনিবার এখানে গাড়ি উল্টে এক নারীর মাথা ফেটে গুরুতর আহত হন। কয়েক বছর ধরে এমন অবস্থা হলেও কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
সেতু এলাকার ব্যবসায়ী আরশাদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি ছাড়াই সড়কের মধ্যে সারা বছর পানি থাকে। বৃষ্টি হলে পুরো সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। পানির ওপর দিয়ে যখন গাড়ি চলে, ঢেউয়ের কারণে সেই পানি দোকানের মধ্যে আছড়ে পড়ে। এতে মালামাল ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়।
মুন্সীগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই এডমিন) বজলুর রহমান আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, গত এক মাস ধরে লাগাতার এখানকার দূরবস্থার কথা সেতু বিভাগকে বলে যাচ্ছি। প্রকৌশলী মাহবুব সাহেব আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। গত কয়েক দিন ধরে ফোন দিচ্ছি, এখন ফোনও ধরে না। ট্রাফিক পুলিশ গর্তের মধ্যে ইটের খোয়া, বালু ফেলেছিল।জলাবদ্ধতায় সব ধুয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, সড়কের গর্ত দূর করতে ইট-পাথরের খোয়া ফেলার কাজ করা হবে, তবে বৃষ্টির জন্য করা যাচ্ছে না। স্থায়ীভাবে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং আরসিসি ঢালাই করতে হবে। এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। সেতু বিভাগে পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে।