ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন খোলা ট্রাক বা পিকআপে চড়ে। পুলিশের কড়া নির্দেশনা থাকলেও থেমে নেই ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে ঢাকায় প্রবেশ করছে গরু। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে সেই ট্রাকে করেই বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা।
১৪ জুন, শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দেখা যায় একের পর এক গরু ভর্তি ট্রাক প্রবেশ করছে ঢাকায়। বিভিন্ন গরুর হাটে ট্রাকভর্তি গরু নামিয়ে ফেরার সময় ওই ট্রাকেই উঠে বাড়ি ফিরছেন নারী-পুরুষ-শিশু সবাই।
দুপুরে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার বেশিরভাগ পোশাক কারখানায় ছুটি শুরু হওয়ায় সড়কে চাপ বাড়তে থাকে যাত্রীদের। বিশেষ করে বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের চাপ দেখা যায়। বাসভাড়া বেশি হওয়ায় খরচ বাঁচাতে বাসের ছাদে বা ট্রাকে করেই বাড়ি ফিরছেন উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও বাড়ি যেতে পারবে ভেবে আনন্দের হাসি দেখা গেছে তাদের চোখে-মুখে।
এদিকে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলো সিটপ্রতি ৩০০-৪০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
ট্রাকে করে গাইবান্ধা যাচ্ছিলেন পোশাকশ্রমিক সুমাইয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই গ্রামে ঈদ করতে যাচ্ছি। বাসের টিকিট পাইনি। টিকিট ছাড়া যে-সব বাস ছাড়ে সেগুলোর ভাড়া ডাবল। এজন্যই ট্রাকে করে বাড়ি যাচ্ছি। কষ্ট হলেও সবার সঙ্গে ঈদ করতে পারবো।’
আব্দুল জলিল নামের আরেকজন বলেন, ‘কাউন্টারে দু-দিন আগে থেকেই টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও গাড়ি পাচ্ছি না। যে গাড়ি পাচ্ছি ভাড়া চাচ্ছে ডাবল। বাধ্য হয়ে ট্রাকে করেই বাড়ি যাচ্ছি।’
যাত্রী নিয়ে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক ইমন। তিনি বলেন, ‘এলাকা থেকে গরু নিয়ে ঢাকায় আসছিলাম। হাটে গরু নামিয়ে দিয়ে এখন ফেরার পথে যা পাই তাই নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। এতে আমাদের বাড়তি কিছু টাকা আসে।’
এদিকে সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশের তৎপরতা থাকলেও ট্রাকে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে পুলিশের তেমন কোনো নজরদারি দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সাভারে সড়ক পরিদর্শন শেষে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান বলেছিলেন, খোলা ট্রাকে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পরিবহনে কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।