স্মার্ট, উন্নত ও মানবিক দুমকী বিনির্মাণের রুপরেখা ঘোষণা করলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাসান মিজান।
২৫০ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি ও ৭৫০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে নারী -পুরুষ সকলের বেকারত্ব দূরীকরণ, দুমকী বাজার খালকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনা
আজ (রবিবার) সকালে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পায়রা চত্বরের বিরতি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনারস প্রতীক প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ মেহেদী হাসান মিজানের পক্ষে মোঃ তরিকুল ইসলাম মনির ইশতেহার উপস্থাপনকালে এই ঘোষণা দেন।
ইশতেহারে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ‘স্মার্ট সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলায় সরকারের প্রত্যয়ের সাথে মিল রেখে দুমকীকে একটি স্মার্ট উপজেলা হিসেবে এর নাগরিক, সমাজ, অর্থনীতি ও প্রশাসনকে আধুনিক এবং প্রযুক্তি সচেতন অর্থাৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণের দিক নির্দেশনা রয়েছে। যেখানে নারী পুরুষ, তরুন বৃদ্ধ থেকে শুরু করে বাদ যায়নি কৃষক, জেলে এমনকী প্রতিবন্ধী তথা সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীও বাদ যায়নি।
এসময় প্রার্থী অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান মিজান, নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির আহবায়ক দুমকী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সুলতান আহমদ মোল্লা ও মনিটরিং দলের আইয়ুব আলী অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহারে মেহেদী হাসান মিজান স্মার্ট বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে তরুণ ও যুবকদের গড়তে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন। তিনি তথ্য প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের কথা বলেছেন।
তরূণদের এগিয়ে নেয়ার লক্ষে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে উপজেলার ৫টা ইউনিয়নের
প্রতিটা থেকে প্রতি বছর ৩০ শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে মেধাবৃত্তি দিবেন। যার অর্থ দাঁড়ায় আগামী পাঁচ বছরে এ জনপদ থেকে ৭৫০ জন তরুন মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মোচন হবে। যা দুমকীকে আরও সামনে এগিয়ে নেবে।
শুধু তাই নয়, গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে প্রধান অন্তরায় ঢাকায় থেকে কোচিং করা। অন্যান্য জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ক্ষেত্রে যাতায়া-থাকার অসুবিধা এমনকী কোনোভাবে ভর্তির সুযোগ পেলেও যথাযথ ক্যারিয়ার প্লানিং এ অনেকে ভুল করেন। সেক্ষেত্রে মেহেদী হাসান মিজান তার ইশতেহারে অধ্যয়ন এবং ভর্তি ও নিয়োগ পরীক্ষার সময় ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের কথা বলেছেন যেটা তরুণ সমাজের জন্য একটা অসাধারণ উদ্যোগ।
চাকরির পাশাপাশি আগামী পাচঁ বছরে দুমকীতে ২৫০ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির কথাও ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রশিক্ষণের অভাবে বিদেশে গিয়ে আমাদের তরুনরা উপযুক্ত বেতন পাননা। এমন বাস্তবতায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তায় বিদেশগামী তরুণদের কারিগরি ও ভাষাসহ বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের কথা আছে ইশতেহারে।
পায়রা বন্দর, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ও পটুয়াখালীতে প্রস্তাবিত ইপিজেড-এর সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠান তৈরিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মতো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাও তিনি নিয়েছেন।
নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে সেলাই ও হস্তশিল্প, মাছ ও সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি-গরু-ছাগল পালনে দক্ষ করে তোলা।
শুধু তাই নয় নারীদের কষ্ট লাঘবে প্রতি বাড়িতে একটি করে টিউবয়েল, বিনামূল্যে বন্ধু চুলা সরবরাহ ও বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনে সহযোগিতার মতো ইউনিক বিষয়কে তিনি সামনে এনেছেন।
দেশজুড়ে উন্নয়নের অভিযাত্রায় দুমকী উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করে সমৃদ্ধ করার লক্ষে বাংলাদেশ সরকারের ‘গ্রাম হবে শহর’ প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের মতামত নিয়ে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং স্বচ্ছতার সাথে প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক, সেতু, কালভার্ট ও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতিও তিনি দিয়েছেন।
ফায়ার স্টেশন ও বিদ্যুতের সাবস্টেশন স্থাপন করার কথা বলেছেন। পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে মেহেদী হাসান মিজান উপজেলার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিক করার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট বসানো এমনকী দুমকী বাজার খালকেও স্বরুপে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন।
মানবসেবাকে গুরুত্ব দিয়ে দুমকীর নারী-পুরুষ-তরুণ-বৃদ্ধ সকলের সুষম উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে মানবিক দুমকী বিনির্মানের বিষয়টিও কিন্তু মেহেদী মিজান তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেছেন।
দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য গ্রামে গ্রামে ফ্রি হেলথ ক্যাম্প করা এবং সদর ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ৪টি ইউনিয়নে ৪টি কমিউনিটি স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র চালু করা।
সেবা প্রদানে এতিম, বিধবা, মিসকিন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ও মানসিক ভারসাম্যহীনকে গুরুত্ব দেয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
বাদ যায়নি সমাজের অসহায় ও প্রবীণদের কল্যাণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের কথাও।
এসবের পাশাপাশি মেহেদী হাসান মিজান ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে তিনি উপজেলার সকল বরাদ্দ জনগণের নিকট উন্মুক্ত করবেন।