কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৭ম শ্রেণির ছাত্রী মেঘলা আক্তার (১৩) নানার বাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও তার সন্ধান মেলেনি আজও। এ ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল কুলিয়ারচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীর মা শাহিনুর বেগম। সাধারণ ডায়েরি নং- ৬৬৩। মেঘলা আক্তার কুলিয়ারচর পৌর এলাকার তাঁতারকান্দি গ্রামের কবির মিয়ার একমাত্র কন্যা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে পার্শ্ববর্তী আশ্রবপুর নানার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর বাড়ি ফিরে না আসলে খোঁজাখুজি শুরু করে স্বজনরা। একপর্যায়ে ওইদিন কুলিয়ারচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন স্কুল ছাত্রীর মা শাহিনুর বেগম।
মেয়ের শোকে কাতর স্কুল ছাত্রীর মা শাহিনুর বেগম বলেন, মেয়েটি গায়ে গতরে বড় হলেও তার বয়স এখন মাত্র ১৩ বছর। পার্শ্ববর্তী বাড়ির মৃত মো. এনাম মিয়া ও ওমান প্রবাসী স্বপ্না বেগমের বখাটে ছেলে জাহাবী তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে আসছিলো এবং বিভিন্ন সময় লোকজন দিয়ে মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাবও দিয়েছিলো। বাল্যবিবাহ দিতে রাজি না হওয়ায় জাহাবী ক্ষিপ্ত হয়ে লোকজন নিয়ে মেঘলাকে ফুসলিয়ে অথবা কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা মেঘলা নিখোঁজের সময় থেকে জাহাবীও বাড়িতে নেই। শাহিনুর বেগম আরো বলেন, কুলিয়ারচর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ তার মেয়েকে উদ্ধার করতে না পারায় আতংকে দিনাতিপাত করছে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরো আন্তরিক হলে মেয়েকে পাওয়া সম্ভব বলে দাবী করেন স্কুল ছাত্রীর মা শাহিনুর বেগম। এ দিকে বিভিন্ন জায়গায় মেয়ের খুঁজে পাগল পাগল হয়ে ঘুরছে সহজ সরল বাবা কবির মিয়া।
স্কুল ছাত্রীর মা শাহিনুর বেগম বলেন, কেউ যদি তার মেয়ে মেঘলা আক্তারের সন্ধান দিতে পারে তাহলে তাকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। কোন স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তি মেঘলা আক্তারের সন্ধান পেলে ০১৭৩৪-৪৮৮১৫৫ নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
অভিযুক্ত জাহাবীকে তার বাড়িতে খুঁজে না পাওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সাধারণ ডায়েরির তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলিয়ারচর থানার এস আই মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টায় অভিযুক্ত জাহাবীকে খুঁজে না পেয়ে তার আত্মীয় স্বজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টাসহ অভিযুক্ত জাহাবীকে খুঁজ করা হচ্ছে। তবে তারা কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় কোন মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করা সম্ভব হচ্ছেনা। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারের পর আসল ঘটনা উদঘাটন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।