চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কৃষকরা পরিবেশবান্ধব মালচিং পেপার পদ্ধতিতে চাষাবাদে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকরা দ্বিগুণ ফলন পাচ্ছে এবং সেই সাথে খরচের পরিমাণও কমে আসছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ এর সহযোগীতায় স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন ইপসা (YPSA) এর সমন্বিত কৃষি ইউনিট-২০১৫ সাল থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলায় কৃষিতে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় ইপসা (YPSA) সীতাকুণ্ড উপজেলায় সর্বপ্রথম মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করে। এই মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে সেচ কম লাগে, আগাছা ও পোকামাঁকড় এর আক্রমণ কম হয় এবং সারে ও কীটনাশক এর অপচয় কম হয় বলে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ অত্যন্ত কম হয়। তেমনি উৎপাদন ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদের তুলনায় অনেক বেশী ফসল উৎপাদন হওয়ায় কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছে। সীতাকুণ্ড উপজেলায় এই মালচিং পেপার পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে ক্যাপসিকাম, টমেটো, কাঁচা মরিচ, স্ট্রবেরী, বেগুন, করলা, শসা সহ আরও বিভিন্ন রকম সবজি। মূলত রবি ও খরা মৌসুমে জমিতে পানির স্বল্পতা থাকায় এই মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে লাভের পরিমাণ বেশী হওয়ায় সীতাকুণ্ড উপজেলার অনেক কৃষক ‘ইপসা’ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে ‘ইপসা’ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সকল কৃষকদের বিভিন্ন উপকরণ ও মালচিং পেপার দিয়ে সহায়তা করে আসছেন বলে এ পদ্ধতিতে কৃষকরা বিভিন্ন সবজি ও ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে এবছর ইপসার তত্বাবধানে ১৯ জন কৃষক মালচিং পদ্ধতিতে প্রায় ২৪ বিঘা জমিতে উচ্চমূল্যের ফসল সহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করছেন। এবং প্রতিনিয়তই মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ কৃষকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার আরও সহযোগীতা নিয়ে এগিয়ে আসলে পরিবেশ বান্ধব এই মালচিং পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি চাষ জেলা ও দেশ জুড়ে বিস্তার লাভ করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইপসার কৃষি কর্মকর্তা মিহির মজুমদার বলেন, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF) এর সহযোগীতায় স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন YPSA (ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন) এর সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর মাধ্যমে আমরা কৃষিতে বিভিন্ন অবদান রাখার পাশাপাশি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারে যুগোপযোগী পদ্ধতি অবলম্বন করি। এ মালচিং পেপার ব্যবহার করে আমরা আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষককে কৃষি খাতে কৃষকের মান ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি, এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ খুব শীঘ্রই অত্র অঞ্চলের গণ্ডি পেরিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।