চৈত্র সংক্রান্তির দিন শিবের গাজন বা চড়ক পুজো তার আগের দিন নীল পুজো।সেও শিবেরই পুজো সুমুদ্রমস্হনকালে উত্থিত হলাহল কন্ঠে ধারণ করে শিব নিলকন্ঠ, তাই নীল পুজো।মায়েরা নীলের উপসকরে সন্তানের মঙ্গল কামনায়। শিব নীলকন্ঠ
-জগতের সব বিষ পান করেও সত্য সুন্দর মঙ্গলময়
সারা বাংলা জুড়ে চলে সেই কোন কাল থেকে প্রবাহ মান লোক উৎসব। বাংলার গ্রামে গ্রামে এই উৎসব নিয়ে আসে নতুন বছরের আগমন বার্তা।পৌরণিক মতে দ্বারকাধীন কৃষ্ণের সঙ্গে শিবের একানিষ্ঠ ভক্ত বাণর রাজার যুদ্ধ হয়।যুদ্ধে জয়লাভের জন্য শিবকে তুষ্ঠ করতে বাণর রাজা নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে ভক্তিমুলক নাচ গান শুরু করেন।এ থেকে শুরু চড়ক পুজোর।অথাৎ শিবকে তুষ্ঠ করবার জন্য বাণর রাজা লৌহশলাকাখচিত কাষ্ঠরুপী দেবতার পুজো শুরু করেন,যা বর্তমানের পাটঠাকুর।তবে চড়ক আচার সর্বস্ব অনুষ্ঠান, পুজোর স্হান,এতে গৌণ।মূল সন্ন্যাসীর নেতৃত্বে খেজুর গাছে কাঁটাভাঙ্গা ও নানাবিধ ফল সংগ্রহ উৎসবের আকর্ষণীয় দিক।
বাণ ও নীল চড়ক পূজার সঙ্গে বিশেষ ভাবে গ্রথিত। চড়কে পূজিত কাঠের মূর্তি ‘নীল’ এবং যে অস্ত্র দ্বারা তার পৃষ্ঠদেশ বিদ্ধ করা হয় তা ‘বাণ’ নামে পরিচিত। নিম বা বেল কাঠের তক্তা দিয়ে তৈরি হয় ‘দেল’, এর উপরিভাগ শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম চিহ্ন অঙ্কিত। লাল শালু দিয়ে মুড়ে দেলকে গৃহস্থের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দেল হল চড়ক পূজার প্রধান দেবতা। স্থানভেদে নীল, নীলাপাট, পাটঠাকুর ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তান্ত্রিক শব সাধনার ন্যায় কোথাও কোথাও ‘মৈন’ (শব মস্তক) পূজাও হয়।
পাশাপাশি দেবতা হিসেবে হরগৌরীর অবস্থান। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন হয় হর-গৌরীর পূজা। তার পর শুরু ‘কালীকাছ’ খেলা। কালীর মুখোশ পরে হাতে তরবারি নিয়ে যুদ্ধের তালে নাচই হল ‘কালীকাছ’ খেলা।