রাজধানীর সাভারে আকাশ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হৃদয় গ্রুপের প্রধান হৃদয় হোসেন ওরফে গিয়ার হৃদয়সহ গ্রুপের ৮ সদস্যকে সাভার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে ২৪ মার্চ, রবিবার দিবাগত রাতে ঢাকা জেলার সাভার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-৪ এর একটি দল।
র্যাব বলছে, একটি ডিজে পার্টিতে মোবাইল হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই যুবক মারধরের শিকার হয়। এর জের ধরে সাভারের একটি খাবার হোটেলের ভেতর ‘হৃদয় গ্রুপ’ ও ‘পিনিক রাব্বি গ্রুপ’র সদস্যরা সংঘর্ষে জড়ালে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয় আকাশ। মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও আগে থেকেই তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই করা টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। আকাশ হত্যার আগে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছিনতাই করা টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গত ২২ মার্চ আমজাদ নামে আরেক যুবককে হত্যার উদ্দেশ্যে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে হৃদয় গ্রুপের সদস্যরা।
২৫ মার্চ, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকা জেলার সাভার এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনের হৃদয় গ্রুপের সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা যায়।
গত বছরের ৯ জুলাই মাদক ব্যবসার টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ‘হৃদয় গ্রুপের’ সদস্যরা ‘পিনিক রাব্বি গ্রুপের’ সদস্য আকাশ মাহমুদ নামক এক যুবককে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এছাড়া এই গ্রুপের সদস্যরা গত ১২ মার্চ সাভার পৌর এলাকায় সোহেল নামক এক ব্যক্তিকে এবং গত ২১ মার্চ সোবহানবাগ এলাকায় আমজাদ নামক অপর এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। র্যাব এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার রাতে র্যাব-৪ এর একটি দল ঢাকা জেলার সাভার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা হৃদয় গ্রুপের প্রধান মো. হৃদয় হোসেন ওরফে গিয়ার হৃদয় (২৪), অন্যতম সহযোগী আরিয়ান আহম্মেদ জয় ওরফে ড্যাগার আরিয়ান (২৩), নাসির উদ্দিন নাসু ওরফে বাবা নাসু (৫২), আবিরুল হক আবির ওরফে কাটা আবির (২৪), জোবায়ের হাসান খন্দকার ওরফে পাইটু জোবায়ের (১৯), জাকির হোসেন রনি (৩০), জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহেদ (৩৬) এবং আমির হামজাকে (২১) গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র, হেরোইন ও কষ্টিপাথর সাদৃশ্য মূর্তি।