আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০১৪ উদযাপন করা হয়। দূতাবাস ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসে কর্মরত সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ জনতা ব্যাংক লি, বাংলাদেশ বিমান, বাংলাদেশ স্কুল, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।
উদযাপনের প্রথম পর্যায়ে, সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার সাথে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম সূচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে, বিকালে মান্যবর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক স্থাপন করা হয়। এরপর, উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তিবর্গ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অতঃপর, জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষ্যে নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ১০৪তম জন্মদিবসে মান্যবর রাষ্ট্রদূত ও তার সহধর্মিণ শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন। পরবর্তীতে, পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। দিবসের তাৎপর্য উপলক্ষ্যে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে বাংলাদেশ স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশী সংগঠনের বক্তাগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত বক্তৃতায় বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বদানের কথা এবং তাঁর সংগ্রামমুখর জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। তারা বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। তারা বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। মহান এ নেতার সে স্বপ্ন পূরণে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহবান জানান তারা।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক সাধনার দিকে লক্ষ্য রেখে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রায় সমগ্রটাই ব্যয় করেন এ দেশের মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের জন্য যার ফলশ্রুতিতে আমরা পেয়েছি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। রাষ্ট্রদূত শিশু অধিকার রক্ষা ও শিশুস্বার্থ সংরক্ষণে বঙ্গবন্ধুর গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে আজকের শিশুরাই হবে দিক নির্দেশক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত শিশুরাই বাংলাদেশকে ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এজন্য শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে শিশুদের উন্নতির জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরির উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় বিশ্বাস করতেন একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়তে হলে শিশুদের উপর বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে শিশুদের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং শিশুদের জন্য একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মস্তারে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ছড়িয়ে পড়বে এবং যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধাগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন সেই সুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। সবশেষে, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।