ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি
ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা জাফরাবাদ মৌজায় মেঘনা নদীর বালুমহালে ইজারার শর্ত ভেঙে অনুমোদনের চেয়ে ৭গুণ বেশি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগের ভিত্তিতে ৯ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ২০দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। শনিবার (১৬ মার্চ) দুপরের দিকে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় বালুমহালে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম,
জানা যায়, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে ৩২ একর নদী সীমানার মধ্যে ১০টি ড্রেজার চালানোর মাধ্যমে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বালু উত্তোলনের
ইজারা পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ শোভনের মালিকানাধীন মুন্সি এন্টারপ্রাইজ। ইজারা পাওয়ার পর থেকে সেখানে বিআইডব্লিউটিএর হাউড্রোগ্রাফিক জরিপের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে ৩২ একর জায়গায় ৮০-৯০ ফুট গভীর থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০টি ড্রেজার দিয়ে গড়ে ১৫-২০ লাখ ঘনফুট বালু তোলা হচ্ছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ শনিবার দুপুরে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম,জাফরাবাদ মৌজার বালুমহালে অভিযান চালিয়ে ৯ জন ড্রেজার কর্মী আটক করেন। পরে প্রত্যেককে ২০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন বরগুনা-কাউতলী লাউখাড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল সালামের ছেলে মোঃ নিয়ামুল ইসলাম (২০),বরিশল বাকেরগঞ্জ শ্যামপুর গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে সিফুর রহমান (২২),বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জ চরনন্দনপুর গ্রামের মাজেদ ব্যাপারীর ছেলে মোঃ আজিজুল হক (৪০),নরসিংদী সদর নেকজানপুর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে মোঃ এবাদুল্লাহ (৩৫),বরিশাল বাকেরগঞ্জ বীরাঙ্গল গ্রামের ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে মোঃ রেজাউল করিম (৪০),ভোলা সদর, পূর্ব নন্দনুর গ্রামের মোঃ সুলতান মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক (৩০),বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জ চরনন্দনপুর গ্রামের মাজেদ ব্যাপারীর ছেলে মোঃ মাইদুল (২৮),বরিশাল সদর,টঙ্গীবাড়ী এলাকার মনছুর সিকদারের ছেলে মোঃ মনির (৩৮), বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চর মরিচাকান্দি গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে মোঃ রাজিব মিয়া (২৩),
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ইজারাদারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা জোটবদ্ধ হয়ে এসব কাজ করছেন। অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ৭২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই হাজার ১৬৫ মিটার নির্মিত সিসি ব্লকের বাঁধ এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, সরকার নির্ধারিত ড্রেজারের চেয়ে অধিক সংখ্যক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে নদীর তীরকে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে ফেলার অপরাধে প্রত্যেককে ২০দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এসময় বালুমহালের ইজারাদারকে ইজারার শর্ত মেনে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।