কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকসহ বাড়ির ৭ সদস্য একযোগে অচেতন হয়ে পড়েছে। পরে অচেতন সকলকে চিকিৎসার জন্য শুক্রবার (৮ মার্চ) রাতে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অসুস্থ্য অন্যান্যরা হলেন, চেয়ারম্যানের মা মজিরন বেওয়া, স্ত্রী চায়না বেগম, কন্যা আখি ও তিন বোন শাহেদা,শাহেরা, ছকিনা বেগম।
চেয়ারম্যানের পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বুধবার সকালের খাবার খেয়ে চেয়ারম্যান ভূরুঙ্গামারীতে যান। সেখানে গিয়ে দুপুরের দিকে চেয়ারম্যান অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এক পর্যায় সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে কুড়িগ্রামে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে বাড়িতে আনা হয়। এসময় বাড়ির সকলকে অসুস্থ্য অবস্থায় দেখা যায়। পরে আবারও শুক্রবার সকাল থেকে সবার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। কেউ সারাদিন ঘুমে অচেতন। আবার কেউ চোখ খুলে তাকাতে পারছেন না। চেয়ারম্যানও আবার অসুস্থ হয়ে ঘুমের ঘোরে চলে যান। তিনি কথা বলতে পারলেও চোখ খুলে তাকাতে পারছেন না। দেখে মনে হচ্ছে প্রচন্ড ঘুম পেয়েছে তার। একা হাটতেও পারছেন না। সন্ধ্যার দিকে অসুস্থ্য সবাইকে জরুরী ভীত্তিতে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কেদার মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হাফিজুর মন্ডল জানান, খবর পেয়ে আমরা পরিস্থিতি দেখতে এসেছি। এখানে বাড়ির ভিতরে কেউ ১০/১৫ মিনিট থাকলেই অসুস্থ্যবোধ করছেন। হয়তো কেউ অসৎ উদ্দেশে চেতনানাশক ছিটিয়েছেন।
বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমিসহ বাড়ির সকলে এক যোগে অসুস্থ হয়ে বর্তমানে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি আছি। চিকিৎসা চলছে। আমার বাড়িতে বেড়াতে আসা তিন বোন আরও বেশি অসুস্থ।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএসএম সায়েম জানান, খবর পাওয়া মাত্র তাদেরকে হাসপাতালে আনতে এ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। তারা এ্যাম্বুলেন্স যোগে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গেছেন। চিকিৎসা দিলেই তারা সুস্থ্য হয়ে যাবেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে কেউ খাবারের সাথে চেতনা নাশক মিশিয়ে থাকতে পারে অথবা ঘরে চেতনা নাশক ছিটাতে পারে।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বদেব রায় জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। ধারনা করা হচ্ছে চুরির উদ্দেশে কেউ খাবারের সাথে চেতনা নাশক মিশিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিনুর রহমান সর্রদার জানান, রাতে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা থেকে একযোগে ৮ জন এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরিক্ষার পর আসলে জানা যাবে তাদের কেন এমনটা হয়েছে।