জীবনের সফলতা যে শুধু চাকুরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় সেটা আবারও প্রমান করলেন, দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন ।
শতব্যস্ততার মাঝেও অবসর সময়ে অনুর্বর ও পরিত্যক্ত পতীত জমিতে ৪০ প্রজাতির সবজি চাষ করে সকলকে অবাক করে দিয়েছেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শেখ জিন্নাহ আল মামুন।
সবজি চাষে তার এই সফলতা বেকার ও তরুণদের মাঝে উৎসাহ যোগাবে এবং কর্ম উদ্দীপনা বাড়াবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সাথে বাংলাদেশ পুলিশের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন ।
দিনাজপুর সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের চারপাশ একসময় ছিল জঙ্গলে ঘেরা।এখন যা পরিনত হয়েছে সবুজের সৌন্দর্যে। অনাবাদি অনুর্বর জমিতে এখন আবাদ হচ্ছে ফুলকপি ,পাতাকপি ,পেয়াজ ,ধনেপাতা ,মুলা ,শাল গম,মরিচ,পেঁপে,গাজর,পালংশক,বেগুন,পটল,শিম,মটরশুটিসহ বিভিন্ন রকমের শাকসবজি।এর পাশাপাশি আবাদ হচ্ছে রঙিন কপি,চায়না ক্যাভেজ,স্ট্রোবেরির মতো বিদেশি সবজিও।
সোমবার ( ১১ফেব্রুয়ারি ) বিকালে সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন বলেন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও যেন পতীত হয়ে পরে না থাকে।প্রধানমন্ত্রীর সেই আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের স্থাপনায় সবজি চাষ করে আসছে বাংলাদেশ পুলিশ ।
দিনাজপুর সদর সার্কেলও এর ব্যতিক্রম নয়। আমি এখানে যোগদানের পর জমিগুলো জঙ্গলে ভরা ছিল।প্রায় ৬০শতক অনুর্বর জমিকে উর্বর করে আবাদযোগ্য করে তোলা মোটেও সহজ ছিল না। বাইরে থেকে জৈব সার মাটি এনে ইউটিউব ইন্টারনেট এর মাধ্যমে চাষাবাদ পদ্ধতি দেখে কৃষিবিদদের সহোযোগিতা নিয়ে আমি, আমার পরিবার, অফিস স্টাফ , ড্রাইভার সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিভিন্ন প্রজাতির সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।
বিভিন্ন প্রজাতির সবজি উৎপাদনে বেসরকারি সংস্থা ইএসডিওর সহোযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।শীতকালীন সবজির হারভেষ্টিং এর পর গ্রীষ্মকালীন সবজি এবং রোজাকে সামনে রেখে হাইব্রিড ভুট্টা,তরমুজ ও আবাদ শুরু করেছেন।যেগুলো রোজার সময় প্রচুর চাহিদা এবং দামও অনেক বেশী থাকে।
সেক্স ফেরোমনের ( কীটপতঙ্গ দমনে এক ধরনের ফাঁদ ) মাধ্যমে পোকা দমন ও জৈব সার দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে আবাদ করা হয়েছে এসব শাক-সবজি।
এই চাষাবাদের মাধ্যমে ক্ষতিকর উপাদান ছাড়াই পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারছেন পুলিশ সদস্যরা।কোন রাসায়নিক ও ক্ষতিকর উপাদান ছাড়াই এই উৎপাদিত ফল ও সবজি একথিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা মেটাবে অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়া ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন তার কার্যালয়ের চারপাশ সবুজের সৌন্দর্যের পাশাপাশি সূর্যমুখি ফুলের বাগান তৈরি করে সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
পুলিশের এই উৎপাদিত শাকসবজি পুলিশ সদস্যের কিছুটা চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি আরো বলেন যে সব অফিসের চারপাশে ফাঁকা জায়গা রয়েছে তারাও যদি এই উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে দেশে কাঁচা শাক সবজির চাহিদা পুরনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।