একটি সড়ক দুর্ঘটনা চোখের আলো কেড়ে নিয়েছে আবুল হোসেনের। তারপর থেকে অন্ধকারময় জীবন তার। শুধু নিজের জীবন নয়, সংসারেও নেমে আসে সেই অন্ধকার। নিজের ভিটে মাটিসহ সর্বস্বটুকু দিয়ে চোখের চিকিৎসা করিয়ে কিছুটা আলো ফিরে পেলেও আবারও সেই আলো নিভু নিভু প্রায়। আবুল হোসেনের বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ডাকবাংলা পাড়া এলাকায়। পেশায় তিনি ছিলেন দূরপাল্লার বাসের সুপারভাইজার।
বাংলাদেশের চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন, ভারতে উন্নত চিকিৎসা পেলেই ভালো হয়ে যাবে তার চোখ। পরে চিকিৎসকের কথা মতো ভারতের চিকিসকের সাথে যোগাযোগ করে আবুল হোসেন। আগামী এক সপ্তহের মধ্যে যেতে বলা হয়েছে তাকে। কিন্তু তার চোখের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩ লাখ টাকা। আর আত্মীয় স্বজনসহ ধারদেনা করে আবুল হোসেন জোটাতে পেরেছেন মাত্র ১ লাখ টাকা।
এ অবস্থায় নিজের চোখের জ্যোতি ফেরাতে দেশের বিত্তবানসহ হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগীতা চান তিনি। সবার সহযোগীতায় আর ২ লাখ টাকা পেলে ভারতে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবেন তিনি। হয়তো সুস্থ হয়ে যাবে তার দুটি চোখ। দেখতে পারবেন পৃথিবীর আলো। তখন আবারও কর্মে যোগ দিয়ে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে নিয়ে সুখি হতে পারবেন সংসারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেশায় দুরপাল্লার কোচের সুপার ভাইজার ছিলেন আবুল হোসেন (৪৩)। ১০ বছর আগে কোচ-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে গাড়ির গ্লাস ভেঙে দুই চোখে আঘাত পান তিনি। পরে ঢাকার ইসলামিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হলেও, আবারও দু-চোখ অন্ধ হয় তার। পরে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন।
আবুল হোসেন বলেন, চোখে না দেখার কারণে আগের মতো আর আয় রোজগার করতে পারছি না। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কেউ যদি আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিত। তার কাছে সারাজীবনের জন্য কৃতজ্ঞ থাকতাম।
তিনি আরও বলেন, নিজের জায়গা জমি বলতে নাই। আমার এক আত্মীয় তার বাড়িতে থাকার আশ্রয় দিয়েছে, সেখানেই বউ বাচ্চা নিয়ে থাকছি।
ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
আবুল হোসেনের প্রতিবেশি আয়নাল হক বলেন, একসময় আবুল হোসেন দূরপাল্লার বাসের সুপারভাইজার ছিলেন। গাড়িতে কাজ করে সংসার চলতো তার। কিন্তু হঠাৎ একটি সড়ক দুর্ঘটনায় চোখে আঘাত পেয়ে অন্ধত্ব বরন করেন।
শুনেছি উন্নত চিকিৎসা হলে নাকি তার চোখের আলো ফিরে পাবে। কিন্তু তার তো সামর্থ্য নেই চিকিৎসা করার। তাই বলবো সরকারের পাশাপাশি সমাজের দানশীল মানুষ এগিয়ে আসলে হয় তো তার চিকিৎসাটা হতে পারে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, বিষয়টি তো আমার জানা নেই। আবেদন দিলে সরকারি ভাবে তাকে সহযোগিতা করা হবে। যেকেউ কথা বলতে চাইলে এই ০১৭৭৩১৭৪৯১৭
নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে মোঃ আবুল হোসেনের সঙ্গে।