কনকনে ঠান্ডা হিমেল বাতাস বইছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। দেশের এই জেলাটি হিমালয় পর্বতের কাছাকাছি হওয়ায় এই জেলায় শীতের তীব্রতা একটু বেশি। এরই মধ্যে গত চার-পাঁচ দিন থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না। গতকাল এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ও জেলাতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে বেশি কাবু হয়েছে শিশু ও বয়স্করা। এমন কনকনে শীতের রাতে দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় শীত বস্ত্র (কম্বল) নিয়ে রাতের অন্ধকারে ঘুরে ঘুরে সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাসরত অসহায় শীতার্ত পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা আদর্শ গ্রাম ও মনশাপুর আশ্রায়ন এবং বোয়ালদাড় ইউনিয়নের বৈগ্রাম আবাসন প্রকল্পে বসবাসরত অর্ধশতাধিক অসহায় শীতার্ত পরিবারের পাশে শীত বস্ত্র নিয়ে হাজির হন মানবিক ইউএনও অমিত রায়। পরে তিনি অসহায় শীতার্ত পরিবারের সদস্যদের শীত বস্ত্র কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দেন।
রাতে কম্বল বিতরণকালে আলিহাট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, ইউপি সদস্য হারুন উর রশিদ, ইমরান আলী এবং বোয়ালদাড় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ. লীগের সভাপতি ছদরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য বকুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কনকনে শীতের রাতে কম্বল পেয়ে সুইটি বেগম বলেন, রাতে ভাত খেয়ে সরকারি ঘুরে শুয়ে আছি হঠাৎ গাড়ির শব্দ। ঘুম থেকে উঠে দেখি ইউএনও স্যার কম্বল নিয়ে আমাদের আদর্শ গ্রামে এসেছেন। কনকনে শীত ও ঠান্ডা বাতাস বইছে এমন সময়ে গরমের কাপড় কম্বল পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমি কিছু দিন পূর্বে স্বামী সন্তান নিয়ে খুবই কষ্টে ছিলাম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার সরকারি ঘর পেয়ে আমি এখন স্বামী সন্তান নিয়ে খুবই আরামে আছি। গত কয়েক দিন থেকে আমাদের এই এলাকায় খুবই ঠান্ডা পড়েছে। কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বাহির হতে পারছি না। এমন শীতের রাতে হঠাৎ গরম বস্ত্র কম্বল পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি ইউএনও স্যার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের ভালো করেন।
ইউএনও অমিত রায় জানান, এই শীতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্টে থাকে ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র মানুষগুলো। সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাসরত মানুষগুলো এমনিতেই অসহায় ভাবে জীবন-যাপন করে থাকে। তাই জেলা প্রশাসক শাকিল আহম্মেদ মহোদয় এর দিক নির্দেশনা মোতাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার শীতার্তদের জন্য কম্বল সবার আগে এদের মাঝে বিতরণ করতেছি।
দিনের বেলায় এ সকল লোকজন বিভিন্ন জায়গায় পেটের দায়ে কাজে ব্যস্ত থাকে বলে রাতের বেলায় খুঁজে খুঁজে তাদের হাতে কম্বল দিচ্ছি। ৬০ জন শীতার্ত পরিবারের সদস্যদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছি। ইতিমধ্যে উপজেলার একটি পৌর সভা ও তিনটি ইউনিয়নে আশ্রায়ন প্রকল্প সহ দুই হাজার শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ কম্বল বিতরণ চলমান থাকবে বলে উল্লেখ্য করে সমাজের বৃত্তবানদেরকে এসকল অসহায় শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি