বহুল আলোচিত চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর খুলশীর পাহাড়তলী কলেজ এলাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলাকালীন সময়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে প্রকাশ্যে বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে হতাহতের ঘটনায় গুলিবর্ষণকারী শামীম আজাদ প্রকাশ ব্লেড শামীম’কে বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র সহ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭,চট্টগ্রাম।
সোমবার (৮ জানুয়ারী) রাত ১০ টায় উপজেলার কুমিরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত আসামী হলেন চট্টগ্রাম জেলার মিরশ্বারাই থানার সাহেরখালী এলাকার আবুল কালাম আজাদের পুত্র শামীম আজাদ প্রকাশ ব্লেড শামীম (৩২) কে ১টি বিদেশী পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করে। উল্লেখ্য যে, গত রবিবার (৭ জানুয়ারী) আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর পাহাড়তলী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র এলাকায় কতিপয় দুস্কৃতিকারী সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশকে বিঘ্ন ঘটনোর উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে সহিংসতা ও গুলিবর্ষণ করে। উক্ত সহিংসতা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ভোটার শান্ত বড়ুয়া এবং জামাল নামক দুজন ব্যক্তি গুলিবৃদ্ধ হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া নুরুল আবছার জানান, নির্বাচন কে কেন্দ্র করে পাহাড়তলী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র এলাকায় পিস্তল উঁচিয়ে গুলিবর্ষণ কারী ব্লেড শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত শামীম আজাদ চট্টগ্রামের মিরশ্বরাই এর স্থায়ী বাসিন্দা এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী এলাকায় বসবাস করে আসছে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ খুলশী ও তার পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় তার সহযোগীদের নিয়ে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিল। গত ৭ জানুয়ারী চট্টগ্রাম-১০ আসন, পাহাড়তলী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র এলাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জনসাধারণের স্বতঃফুর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ দেখে গ্রেপ্তারকৃত শামীম আজাদের নেতৃত্বে কতিপয় দুস্কৃতিকারী দেশী ও বিদেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সহিংসতার ও নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্ন ঘটানোর উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত শামীম আজাদ একটি বিদেশি পিস্তল দিয়ে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। উক্ত গুলিবর্ষণের ঘটনায় ভোটার শান্ত বড়ুয়া এবং জামাল নামক দুজন ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। গ্রেপ্তারকৃত শামীম ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে পেশীশক্তি প্রদর্শন ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভোটারদের ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন ভোটাধিকারে বাঁধাদান করতে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করছিল। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে সে কৌশলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায় এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় আত্মগোপন করে পরবর্তীতে র্যাব কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। সে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্মাতক সম্পন্ন করে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধ সংক্রান্তে ৫টির অধিক মামলা রয়েছে এবং এ সকল মামলায় ৩ বার কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।