নওগাঁর মহাদেবপুরে এবার গভীর রাতে নৌকার নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। এব্যাপারে স্বতন্ত্রপ্রার্থী এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের ছেলে সাকলাইন মাহমুদ রকিসহ ১২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
নওগাঁ-৩(মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনে নৌকার প্রার্থীর সমর্থক রুহুল আমিন লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, সাকলাইন মাহমুদ রকি, ঝলঝলি গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে জাহিদ হাসান (২৮), আবুল কালামের ছেলে ইউনুছ আলী (৪৫), মৃত নৈমুদ্দিনের ছেলে হাসান (৫০), ফাজিলপুর বরেন্দ্র মোড়ের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মিঠু রহমান (৩৬), আন্ধারকোঠা গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে সোহাদ (৩৮), দুলালপাড়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান রতন (২৮), চানপাড়া জয়পুর এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে হাসান আলী (২৮), উপজেলা সদরের রবিন চন্দ্র দাসের ছেলে রঞ্জন দাস (৪২), স্কুলপাড়ার মৃত রঞ্জুর ছেলে তনু কুমার দেব (২৬), আজিপুরের দুয়েফ উদ্দিন তরফদারের ছেলে রাকিবুল হাসান ও জোয়ানপুর গ্রামের মৃত খলিলের ছেলে হাবিব হোসেন (৩৩) আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিনকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝলঝলি মোড়ে রাস্তার উত্তর পাশে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ঘরে বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও পেট্রালসহ এসে ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে অফিস ঘর পুড়ে যায়। এতে প্রায় ১৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অফিসের সামনে ১৬বিঘা জমির খড়ও পুড়ে যায়। যার ফলে এক লাখ ১২ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। এছাড়া এলাকায় কোথাও কোনো নৌকার নির্বাচনী অফিস করা যাবেনা বলে তারা যাবার সময় হুমকি দিয়ে যায়। ফলে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
এব্যাপারে সাকলাইন মাহমুদ রকি বলেন, এই আগুন দেওয়ার ঘটনা পুরোপুরি মিথ্যে ও বানোয়াট। এটা একটা প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি। এছাড়া আমার নেতাকর্মীদের বলা আছে তারা যেন কোনো ধরনের সহিংসতায় জড়িত না হয়। আমরা চাই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। তাই আগুন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এর দুদিন আগে ১৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের খোর্দকালনা গ্রামে স্বতন্ত্রপ্রার্থী এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের ট্রাক মার্কার অফিস ভাংচুর এবং হামলা চালিয়ে লোহার রড, লাঠি প্রভৃতি দিয়ে বেদম মারপিট করে এমপি সেলিমের দ্ইু ছেলে সাকলাইন মাহমুদ রকি ও রাকিবসহ ১০ জনকে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ করা হয়। এতে মাসুদ বিল্লাহ নামে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর এক কর্মীর হান হাত ভেঙ্গে যায়। তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই ঘটনায় সাকলাইন মাহমুদ রকি বাদি হয়ে নৌকার কর্মী খাজুর ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিনের শ্যালক হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামের জসীম উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে মাসুদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম, ছেলে সাব্বির হোসেন, ফাজিলপুর গ্রামের মৃত আজাদ আলীর ছেলে রাসেল হোসেন, পাটকাটি গ্রামের আহসান কিবরিয়া বল্টু, দেবীপুর গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম, কুঞ্জবন গ্রামের নয়ন হোসেন, জোয়ানপুর গ্রামের আব্দুল করিমসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
একই ঘটনায় মাসুদুর রহমান বাদি হয়ে মাসুদ বিল্লাহ, মিঠু রহমান, কাবিল সোহাগ, আসাদুজ্জামান রতন, হাসান আলী, সাদ্দাম হোসেন, তনু কুমার দেব, সাকলাইন মাহমুদ রকি, রাকিবুল হাসান, সিফাত, মাসুদ রানাসহ অজ্ঞাত আরো ২০/২১ জনকে আসামী করে পাল্টা মামলা দায়ের করেন।
এদের মধ্যে সাকলাইন মাহমুদ রকিসহ ১১ জন বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিন নেন।